ঘুষ দুর্নীতি ভুয়া বিল ভাউচার সরকারি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে অবৈধ অর্থে বাড়ি গাড়ি প্লট ফ্ল্যাটসহ শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ সওজের হিসাব রক্ষক জাকির ও স্ত্রী সুলতানার বিরুদ্ধে

আপলোড সময় : ০৮-১০-২০২৫ ০৮:২০:৩১ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৮-১০-২০২৫ ০৮:২০:৩১ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক 

সড়ক ও অধিদপ্তর (সওজ) কর্মরত অধিকাংশ কর্মকর্তা প্রকৌশলী কর্মচারী ঘুষ দুর্নীতি আর সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে শূন্য থেকে বনে গেছেন শত কোটি টাকার মালিক অবৈধ অর্থে অনেকে তৈরি করেছেন বিলাসবহুল বাড়ি গাড়ি এমনকি আকাশযান ক্রয় করারও অভিযোগ আছে, সম্প্রতি এমনই একটি অভিযোগ এসেছে ঘুষ দুর্নীতি আর সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ  পিরোজপুর সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের বিভাগীয় হিসাব রক্ষক মোঃ জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার নকশাকার রত্না সুলতানার বিরুদ্ধে।



মোঃ জাকির হোসেন বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার রামনা ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের মৃত দেলোয়ার হোসেনের পুত্র কর্মজীবন শুরু করেন এজি অফিসে সেখানেও তিনি ছিলেন ব্যাপক বিতর্কিত সরকারি বিভিন্ন ফাইল আটকে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এজি অফিসের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, জাকির হোসেন ভদ্রবেশী একজন ভয়াবহ ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ছিল কিন্তু বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনেক মন্ত্রী এমপির সাথে সখ্যতা থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে কখনো কোন অভিযোগ কার্যকর হয়নি এবং ২০১৮ সালে তাকে এজি অফিস থেকে সওজের পিরোজপুরের বিভাগীয় হিসাব রক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। 




পিরোজপুরের বিভাগীয় হিসাব রক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই সখ্যতা গড়ে তোলেন সাবেক সংসদ সদস্য মহারাজ, সাবেক সংসদ সদস্য আউয়াল, ও সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সঙ্গে, অভিযোগ আছে পিরোজপুরের সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের মেরাজ, মহারাজ, আউয়াল ও রেজাউল করিমের নেতৃত্বে সড়ক বিভাগের কয়েক হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয় ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে সড়কের কাজ না করেই কয়েক হাজার কোটি টাকা বিল উত্তোলন করে সেই দুর্নীতির তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসে কিন্তু এখানে জাকির হোসেন থেকে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাহিরে। তিনি ছিলেন সেই চক্রের একজন প্রভাবশালী সদস্য কারণ সকল বিল তিনি অনুমোদন করতেন।



৫ ই আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর ফ্যাসিবাদের অনেক দোসর পালিয়ে গিয়েছে চাকরিচুতো হয়েছে কিন্তু জাকির হোসেন বহাল তবিয়তে এখনো রয়েছেন দায়িত্বে, অভিযোগ আছে ৫ই আগস্টের পরে বেশ কিছু রাজনীতিবিদদের পিছনে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে সবকিছু ধামাচাপা দিয়েছে।



২০২৪ সালে সারা বাংলাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয় পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) বিভাগীয় হিসাবরক্ষক মো. জাকির হোসেন-এর বিরুদ্ধে একটি হেলিকপ্টার কেনার অভিযোগে দেশের শীর্ষ সকল গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সত্যতা যাচাইয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধান শুরু করে গত ১৩ জানুয়ারি বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) চিঠি দিয়েছিলেন পিরোজপুর দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান এবং সেটা এখনো অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।



পিরোজপুর সওজের অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারী বলেন, তিনি সড়ক বিভাগের একজন ভয়ংকর ঘুষখোর কর্মকর্তা ঘুষ না দিলে সকল ফাইল আটকে দেন এবং বিগত সরকারের সময় তিনি  আউয়াল মালেক মহারাজ ও সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তাদের ক্ষমতার ব্যাপক প্রভাব দেখাতেন অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরও তিনি কিভাবে এখনো বহাল তবিয়তে? নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মচারী বলেন আমি ওনার খুলনার বাসায় গিয়েছি ওনার বেতন সর্বসাকুল্য ৬০ হাজার টাকা অথচ তিনি রাজপ্রাসাদ তৈরি করেছেন রয়েছে তাদের একাধিক গাড়ি।



একাধিক অনুসন্ধানী তথ্যে উঠে আসে জাকির হোসেন তার স্ত্রী রত্না সুলতানা, মেয়ে শারমিন সুলতানা, ছেলে শাহরিয়ার হোসেন, বোন লাইজু আফরিন সহ আরো বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ ক্রয় করেছেন, খুলনা মহানগর সোনাডাঙ্গা থানায় বয়রা কলেজ রোডে ১৭৪ নম্বর বাড়ি, ও সোনাডাঙ্গার ৩ নাম্বার রোডের ৩৮৩ নম্বর আলিশান বাড়ি দুইটি ছাড়াও রয়েছে খুলনা শহরে আরো বেশ কয়েকটি বাড়ি, এছাড়া শ্বশুর বাড়ি খুলনা খালিশপুরে একাধিক বাড়ি বিভিন্ন জমি ক্রয় করেছেন, নিজ জন্মস্থান বরগুনা ও বামনা উপজেলায় রয়েছে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ, রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি রামপুরা বনশ্রী উত্তরায় রয়েছে একাধিক প্লট ফ্লাট বাড়ি, চলাচলের জন্য পরিবারের সদস্যদের জন্য রয়েছে একাধিক গাড়ি আরো অভিযোগ আছে পরিবারের সদস্য বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের নামে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ, অথচ তিনি ৬০ হাজার টাকা বেতনে এত সম্পদ করা সম্ভব ছিল না কখনোই।


সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মোঃ জাকির হোসেন, স্ত্রী রত্না সুলতানা, মেয়ে শারমিন সুলতানা, ছেলে শাহরিয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে তথ্য জানার জন্য।


নাম প্রকাশ না করার  শর্তে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ আমরা গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করি কারণ এটি আমাদের অনুসন্ধান কার্যক্রম আরো সহজ হবে এবং তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে মামলা সহ কঠিন শাস্তির সুপারিশ করা হবে। 



এ বিষয়ে জানতে চাইলে হিসাব রক্ষক জাকির হোসেন ও স্ত্রীর রত্না সুলতানার ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি এবং পিরোজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাধিক মামলার আসামিকে দিয়ে হুমকি প্রদান করান নিউজ প্রকাশ না করার জন্য এছাড়াও বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে দিয়ে অর্থের প্রস্তাব দেন।


জাকির হোসেন ও তার স্ত্রীর রত্না সুলতানার আরো অনিয়ম দুর্নীতি ও অবৈধ অর্থের সম্পদের বিবরণ নিয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন আসছে দ্বিতীয় পর্বে।
 
 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ গোলাম মাওলা শাওন
মোবাইল : ০১৭১১-০০৬২১৪

অফিস :

প্রধান কার্যালয় : ৩১/১ শরীফ কমপ্লেক্স ৫ম তলা পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০

মোবাইল : ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০

ই-মেইল : [email protected],  [email protected]