
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীতে স্থানীয় জনতার হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক এসআই মাহবুব হাসান। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার ভদ্রা হজের মোড় এলাকায় উত্তেজিত জনতা তাকে গণধোলাই দিয়ে চন্দ্রিমা থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, শনিবার রাতে এসআই মাহবুব হাসানকে তার ভাড়া করা বাসা থেকে ধরে এনে গণপিটুনি দেওয়া হয় জনতা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নেয়। ওই সময় সাবেক এসআই হাসানের হাতে লাঞ্ছিত ও নির্যাতণের হাত থেকে রক্ষা পেতে ঘুষ দেয়া দলীয় ছাত্র-জনতা চন্দ্রিমা থানার সামনে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে হাসানকে থানা হাজতে ঢুকিয়ে রাখা হয়। পরে কাশিয়াডাঙ্গা জোনের এডিসি শ্রী পঙ্কজ দাস চন্দ্রিমা থানায় আসেন। সর্বিক পরিস্থিতি দেখে তাঁর নির্দেশনায় চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদি মাসুদ ও থানার সকল এসআই এবং পুলিশ সদস্যদের সাথে নিয়ে উত্তেজিত জনতাকে বুঝিয়ে সরিয়ে দেন। ধীরে ধীরে থানা প্রাঙ্গন থেকে ভুক্তভোগীরা স্ব-স্ব অবস্থানে ফিরে যায়। পরে রাত দুইটার দিকে কড়া পুলিশি প্রহরায় সাবেক ডিবি এসআই হাসানকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাবি ছাত্রলীগ থেকে আসা মাহবুব হাসান। ডিবিতে কর্মরত থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও নির্যাতন করতেন। তার বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এক ভুক্তভোগীর বাবার দায়ের করা পাঁচ বছরের পুরনো এক মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর এক রাজিব আলী রাতুলকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে শিমলা পার্কে যায়।
ওই সময় তার পিতাকে মুঠো ফোনে ফোন দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে হাসান। টাকা দিতে অপারগতা জানালে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা মোঃ মাসুদ রানা সরকার বাদী হয়ে মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এসআই মাহবুব হাসান বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত হয়ে আছেন বলে জানা গেছে। তবে তার দাবি, তাকে ঢাকায় বদলি করা হলেও পারিবারিক কারণে তিনি সেখানে যোগদান করতে পারেননি।