তুরাগবাসী ঢাকা-১৮ আসনে আছি এবং থাকতে চাই!

আপলোড সময় : ২১-০৮-২০২৫ ০৮:২৪:১৭ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২১-০৮-২০২৫ ০৮:২৪:১৭ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্গত ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নং ওয়ার্ড এলাকাটি ২০০১ সাল থেকে ঢাকা-১৮ তথা সাবেক ঢাকা-০৫ আসনের সাথে সংযুক্ত হয়ে আছে। অত্র এলাকার মানুষের জমি জমা থেকে শুরু করে সকল নাগরিক সুযোগ সুবিধা ঢাকা-১৮ আসনের সাথে সম্পৃক্ত। আমরা বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সূত্রে জানতে পারি যে, আমাদের উক্ত ৩ টি ওয়ার্ড ঢাকা-১৮ আসন হইতে কর্তন করে ঢাকা-১৬ আসনে অন্তর্ভূক্তি করার হীন ষড়যন্ত্র চলছে। আপনারা অবগত আছেন যে, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ৩০০ আসনের মধ্যে ৩৯ টি আসনের নতুন করে সীমানা নির্ধারনের গেজেট প্রকাশ করে। যার মধ্যে ঢাকা-১৮ আসন ছিলোনা। একটি কুচক্রি স্বার্থান্বেষী মহল বর্তমান  তুরাগ থানা তথা ৩টি ওয়ার্ডকে মিরপুরুপল্লবীর সাথে অন্তর্ভুক্ত ঢাকা-১৬ আসনে সম্পৃক্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।


এমতাবস্থায় আমরা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অন্তর্গত ৫২, ৫৩, ৫৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এই হীন যড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করছি। আমাদের ৫২,৫৩,৫৪ নং ওয়ার্ডে  প্রায় লক্ষাধিক ভোটারের বসবাস। অত্র ওয়ার্ডসমূহের বাসিন্দাদের নাগরিক সকল কার্যক্রম, যাতায়াত ব্যবস্থাসহ সব কিছু ঢাকা-১৮ আসনের সাথে সংযুক্ত। আমরা ঢাকা-১৮ আসনের বাসিন্দারা সুখে-দুঃখে একে আপরের সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে মিলেমিশে বসবাস করছি। আমরা আমাদের নাগরিক সকল কাজের সুবিধার্থে এবং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অটুট রাখতে ঢাকা-১৮ আসনে আছি এবং থাকতে চাই।


২০২৪ সালের মহান গণঅভ্যুত্থানে উত্তরা ছিল একটি অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। সেই ঐতিহাসিক আন্দোলনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল সাহসী তুরাগবাসী। শহীদের সূচনা তুরাগ থেকে শুরু হয়। সুতরাং তুরাগ থানা ঐতিহাসিকভাবেই বৃহত্তর উত্তরার অবিচ্ছেদ্য অংশীদার। অথচ একটি চক্র অপ-রাজনৈতিক স্বার্থে-উত্তরায় জমি দখল, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে-তুরাগ থানাকে উত্তরা থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এটি কেবল তুরাগবাসীর রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করবে না; বরং ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে উত্তরার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন-সেই শহীদদের প্রতি এক চরম অসম্মান প্রদর্শন করবে।

ঢাকা-১৮ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ঢাকা-১৬ তে গেলে যেসব অসুবিধা হবে:
১. অঞ্চলিক স্বাতন্ত্র‍্য নষ্ট হবে - তুরাগ দীর্ঘদিন ধরে উত্তরার সঙ্গে একই রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিচয়ে বেড়ে উঠেছে। ঢাকা-১৬ তে গেলে এই স্বাতন্ত্র‍্য হারিয়ে যাবে।
২. উন্নয়ন বঞ্চনা - ঢাকা-১৬ মূলত মিরপুরুপল্লবীকে কেন্দ্র করে। সেখানে তুরাগ থাকবে প্রান্তিক অবস্থানে। ফলে উন্নয়ন, বাজেট ও অবকাঠামোগত সুবিধা বরাদ্দে তুরাগ বঞ্চিত হবে।
৩. অধিকার হরণ - তুরাগের জনসংখ্যা ও ভোটার সংখ্যা মিরপুরুপল্লবীর বিশাল জনগোষ্ঠীর তুলনায় কম। তাই তুরাগবাসীর মতামত গুরুত্ব পাবে না।
৪. সংস্কৃতি ও ইতিহাসের অবমূল্যায়ন - তুরাগের ঐতিহাসিক ভূমিকা ঢাকা-১৮-এর সাথে যুক্ত। ঢাকা-১৬ তে অন্তর্ভুক্ত করলে সেই ইতিহাস উপেক্ষিত হবে।
৫. স্থানীয় নেতৃত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হবে - তুরাগ থেকে উঠে আসা নতুন নেতৃত্ব ঢাকা-১৬ এর বড় ওয়ার্ডগুলোর আড়ালে হারিয়ে যাবে।


ঢাকা-১৮ এ অন্তর্ভুক্ত থাকলে যেসব সুবিধা থাকবে:
১. উত্তরার সঙ্গে ঐতিহাসিক ও ভৌগলিক ঐক্য বজায় থাকবে।
২. উন্নয়ন অগ্রাধিকার পাবে - উত্তরা ও তুরাগ একসঙ্গে থাকলে পরিকল্পিত উন্নয়ন কার্যক্রমের সুযোগ বাড়বে।
৩. রাজনৈতিক অধিকার সংরক্ষিত হবে - ভোটের ভারসাম্য বজায় থাকায় তুরাগবাসীর মতামত ও নেতৃত্ব প্রভাব বিস্তার করতে পারবে।
৪. সংস্কৃতি, ইতিহাস ও শহীদদের আত্মত্যাগের মর্যাদা রক্ষা পাবে।
৫. জনগণের দাবি ও সমস্যা সরাসরি জাতীয়ভাবে প্রতিফলিত হবে - ঢাকা-১৮ উত্তরাুতুরাগ কেন্দ্রিক হওয়ায় এলাকার সমস্যা, যেমন—যানজট, নদী দখল, অবকাঠামো সংকট-এসব বিষয় সংসদে ও উন্নয়ন প্রকল্পে বেশি প্রাধান্য পাবে।

কর্মসূচী ঘোষণা: 
ঢাকা-১৮ আসনকে বিভক্ত করার যড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আগামীকাল ২২শে আগষ্ট শুক্রবার সকাল ১০.০০ টায় উত্তরা খালপাড়ে সচেতন তুরাগবাসীর উদ্যেগে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হবে।


অতএব, উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচীতে সর্বস্তরের জনসধারণকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। এক্ষেত্রে সাংবাদিক ভাইদের যথাযথ সহযোগিতা কামনা করি। আসুন আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াই এবং ২০২৪-এর গণআন্দোলনের পরবর্তী ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করি। সবাইকে সংবাদ সম্মেলনে আসার জন্য ধন্যবাদ।


সাংবাদিক সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক, লিখিত বক্তব্য পেশ করেন ৫২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল প্রার্থী মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, ৫৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল প্রার্থী সুরুজ্জামান, ৫৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল প্রার্থী মো: শফিকুল ইসলাম, তুরাগ মধ্য থানা জামায়াতের আমীর গাজী মনির হোসাইন, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন কামরুল হাসান। আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক মুজিবুর রহমান, মুহিবুল্লাহসহ তুরাগের বিশিষ্টজনেরা। 




 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ গোলাম মাওলা শাওন
মোবাইল : ০১৭১১-০০৬২১৪

অফিস :

প্রধান কার্যালয় : ৩১/১ শরীফ কমপ্লেক্স ৫ম তলা পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০

মোবাইল : ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০

ই-মেইল : [email protected],  [email protected]