
এম এ কুদ্দুছ, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পৌরসভা সহ ইউনিয়ন গুলোতে প্রখর তাপে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। আবহাওয়া জনিত কারণে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাস সর্দি-জ্বর। এই আবহাওয়া জনিত কারণে সব বয়সি মানুষই সর্দি জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
এ জ্বরের তাপমাত্রা ১০০ থেকে ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত অনুভূত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ জ্বর হলে ডেঙ্গুর আশঙ্কায় চিকিৎসকরা ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্খ ছড়িয়ে পরছে। গত কয়েকদিন(৭-১৫) ধরে হাসপাতাল, ডাক্তার ও প্যাথলজি সেন্টারে জ্বরে আক্রান্তদের ছুটাছুটি করতে দেখা যাচ্ছে।
কটিয়াদী উপজেলা সরকারি হাসপাতাল সহ বিভিন্ন কেয়ার সেন্টারে ঘুরে দেখা গেছে, রোগিদের ভিড়ে ডাক্তাররা হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকেই ডায়রিয়া ও স্বাসকষ্ট শিশুদের অধিকাংশই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। রোগিরা জানান এসব হাসপাতালে ভর্তিতে ভিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে ডাক্তার ও নার্স অপ্রতুলতার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ঔষুধ পত্র স্যালাইন সংকট রয়েছে।
এছাড়া প্রয়োজনীয় রক্তের জোগান দিতে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত এসব অঞ্চলে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়নি। চিকিৎসকরা বলেন, ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত না হলেও রোগিদের দূর্বলতার সঙ্গে শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দিচ্ছে।
এ সঙ্গে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে, বলে চিকিৎসকরা বলেন। ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হলে ওষুধ সেবন করেও ৪/৫ দিনেরও আরোগ্য লাভ হচ্ছে না। আক্রান্তদের ন্নূতম ৫/৬ দিন ভুগতে হচ্ছে। জ্বর কমে গেলেও শারীরিক দুর্বলতা থাকে বেশকিছু দিন পর্যন্ত। ভাইরাস জ্বরে আক্রান্তদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় বাড়ছে। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা ছাড়া ও ডায়গনোস্টিক সেন্টার গুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়। তবে ডায়গনোস্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু পজিটিভ রোগীদের রেজিস্টার এন্টি করা হয়না বলে জানান তারা। এদিকে কোনো কোনো পরিবারে সব সদস্য একসঙ্গে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জ্বরের অসহ্য যন্ত্রণা ভোগের কথা তুলে ধরে দোয়া কামনা করছেন।
কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ঈশা খান জানান, প্রতিদিন আউটডোর ও ইমার্জেন্সিতে ৭ শতাধিক রোগীর আগমন ঘটে। এর মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ রোগীই জ্বরে আক্রান্ত।
তবে এসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন না। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। জ্বরে আক্রান্ত রোগীর চাপ বাড়ায় বেশকিছু রোগীর ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো হলে কয়েকজনের পজিটিভ এসেছিল। এখন প্রায় সবারই নেগেটিভ রিপোর্ট আসছে। জ্বর হলে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। বর্তমানে অতিরিক্ত গরমের কারণে ভাইরাস জ্বর-সর্দি বেড়েছে। এই জ্বরের তেমন এন্টিবায়োটিক প্রয়োজন নেই। প্যারাসিটামল জাতীয় সাধারণ ওষুধের পাশাপাশি বেশি করে পানি-শরবত ও ভিটামিন সি জাতীয় ফলমূল খেতে হবে। পানিশূন্যতা দেখা দিলে ওরস্যালাইন খেতে হবে।
জ্বরে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক সেবন করা যাবে না। জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবনের জন্য আহবান রাখেন তিনি।