সুনামগঞ্জে ৯০টি গরু অদৃশ্য 

আপলোড সময় : ২০-০৭-২০২৫ ১০:১৬:০২ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২০-০৭-২০২৫ ১০:১৬:০২ অপরাহ্ন
 
‎
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : 
‎
‎সুনামগঞ্জে ৯০টি গরু অদৃশ্য হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় জেলা জুড়ে নানান প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ জনগনের মনে। জানা যায় অবৈধভাবে নিয়ে আসা ৯০টি গরুর একটি চালান প্রায় আড়াই মাস আগে জব্দ করেছিল টাস্কফোর্স। এরপর আইনী জটিলতার কথা বলে সংশ্লিষ্টরা নিলাম না দিয়ে স্থানীয় ৫ ব্যক্তির জিম্মায় দিয়ে দেন প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা মূল্যের ৯০টি গরু। আবার নিলামের দিন বিজিবি ক্যাম্পে সাংবাদিকরা উপস্থিত হলে কয়েকজন বাড়তি লোকদের আনাগোনা করতে দেখা মিলে এসময় সাংবাদিকরা তাদের দেখে সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করে আপনারা কারা এখানে কি কিভাবে এসেছেন? তারা হিমশিম খেয়ে বলে আমরা এডিসির সাথে কথা বলে এসেছি। তবে এডিসি জানান আমি তাদের জানিনা ওরা আসলে কারা। ঠিক তখন থেকেই একটা হট্টগোল শুরু হয়।
 
 
 
এদিকে পুলিশ তদন্তে নেমে এখন জানতে পারে ৯০টি গরু জিম্মাদারদের কাছে আর নেই। তাহলে গুরু কি অদৃশ্য হয়ে গেল? স্থানীয়দের আশঙ্কা এগুলো বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে নয়তো উচ্চ শিক্ষিতরা গায়েবি ফু দিয়ে অদৃশ্য করে ফেলেছে। এতে করে সরকার মোটা অংকের টাকা রাজস্ব হারিয়েছে এর গাফিলতি আসলে কারা এর দায়ভার গ্রহণ করবেন?
‎
 
‎অপরদিকে সুনামগঞ্জের কাস্টমসের  সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন বলেন, জব্দকৃত গরু তারা এভাবে নিলাম দিতে পারে না কাস্টমসের নীতিমালায় আইনে ১৯২/১)বলে। তারা এগুলো এটা কাস্টমসে জমা করতে পারতো। আমরা কাস্টমসের পক্ষ থেকে ২৮ বিজিবি কর্তৃক ও জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার হয়েছে বলে জানান।
‎
‎
সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল দোয়ারাবাজার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে নিয়ে আসা ৯০টি গরুর একটি চালান সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা নদী থেকে জব্দ করে টাস্কফোর্স। নিয়মানুযায়ী নিলামের প্রস্তুতি নিলে আইনী জটিলতা দেখা দেওয়ায় এগুলো দোয়ারাবাজারের ৫জন ব্যক্তির জিম্মায় দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসন, বিজিবি ও পুলিশের প্রতিনিধিদের সামনে টাস্কফোর্স কমান্ডার ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদি হাসান হৃদয় দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলাবাজারের জাহাঙ্গীর আলম, সাব্বির আহমদ, বালিহড়া গ্রামের হারুনুর রশিদ, ধর্মপুর গ্রামের নাজমুল হাসান ও দোয়ারাবাজারের বাহার উদ্দিনের কাছে ৯০টি গরুর আইনী জিম্মা দেন।
‎
 
‎এসময় দায়িত্বপ্রাপ্তরা ৯০টি গরুর বিভিন্ন আলামতও নথিবদ্ধ করেন। পাশাপাশি টাস্কফোর্স কমান্ডার বিজিবিকে নিয়মিত মামলা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন। জানা গেছে, ৯০টি গরু জিম্মায় দেওয়ার আগে প্রাণিসম্পদ অফিস নিশ্চিত করেছিল এগুলো ভারত থেকে চোরাই পথে নিয়ে আসা হয়েছিল।কিন্তু দোয়ারাবাজারের গরুর হাটের ইজারাদার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে অভিযোগ করায় নিলামে বিপত্তি দেখা দেয়। ফলে নিলাম না দিয়েই স্থানীয় ৫ ব্যক্তির জিম্মায় দেওয়া হয়েছিল গরুগুলো।
‎
‎
এদিকে কোর্টের সিদ্ধান্তের পরে নিলাম দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। জানা গেছে, গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে সুনামগঞ্জ সদর থানার এসআই আল আমিন ঘটনাস্থলে সরেজমিন পরিদর্শনে যান জব্দকৃত গরুগুলো কোথায় আছে দেখার জন্য। তিনি জিম্মাদারদের সঙ্গে দেখা করে গরুগুলো কোথায় আছে জানতে চাইলে কেউ তাকে গরু দেখাতে পারেনি। পরে পুলিশের এই কর্মকর্তা গত ১০ জুন আদালতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে গরুগুলো জিম্মাদাররা তাকে দেখাতে পারেননি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
 
 
জিম্মাদার হারুন রশিদ বলেন, গরুগুলো বিভিন্ন স্থানে আছে। আমারগুলোও আমার কাছে নেই। কোথায় আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন স্থানে আছে। অপর জিম্মাদার নাজমুল হাসান বলেন, আমার গরুগুলোও আমার কাছে নাই। এগুলো বাঁশতলা এলাকায় আছে। তাহলে পুলিশ কেন খুঁজে পেলনা জানতেই চাইলে তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। আমি এ নিয়ে চরম পেইনের মধ্যে আছি।
 
 
পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আল আমিন বলেন, আমি সুনামগঞ্জ সদর থানা থেকে বদলি হয়ে এসেছি। তবে এর আগে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। গরুগুলো জিম্মাদারদের কাছে পাইনি। এসংক্রান্ত প্রতিবেদন আমি আদালতে জমা দিয়ে এসেছি।
 
 
‎সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল জাকারিয়া কাদির বলেন, ৯০টি গরু টাস্কফোর্স কমান্ডার ৫জনকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। এখন পুলিশ সরেজমিন তদন্ত করে জানতে পেরেছে এগুলো জিম্মাদারের কাছে নেই।
‎
‎
এ বিষয়ে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। আদালত এখন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন। তবে টাস্কফোর্স কমান্ডার লিখিত নিয়েই ৫জনের জিম্মায় গরুগুলো দিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
 
 
‎সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ওই ঘটনার টাস্কফোর্স কমান্ডার মেহেদি হাসান হৃদয় বলেন, আমি বিজিবিকে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দিয়ে গরুগুলো ৫ জনের জিম্মায় দিয়েছিলাম। এগুলো রাখার এখতিয়ার আমাদের নেই। এ বিষয়ে আদালতই সিদ্ধান্ত নিবেন।
 
 
 
 
 
 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ গোলাম মাওলা শাওন
মোবাইল : ০১৭১১-০০৬২১৪

অফিস :

প্রধান কার্যালয় : ৩১/১ শরীফ কমপ্লেক্স ৫ম তলা পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০

মোবাইল : ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০

ই-মেইল : [email protected],  [email protected]