
তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর : গাজীপুরের কালীগঞ্জে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের শিকার এক তরুণী ধর্ষকের বাড়িতে গত রোববার (০৬ জুলাই) রাত থেকে অবস্থান নিয়েছেন বিয়ের দাবিতে। অভিযুক্ত ফরিদ পালোয়ান (২৫) ধর্ষণের মামলা দায়েরের পরই পালিয়ে গেছেন ইতালিতে।
ভুক্তভোগী তরুণী বিশোর্ধ নদী আক্তার (ছদ্মনাম) কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাসিন্দা। আর অভিযুক্ত ফরিদ পালোয়ান কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের হরিদেবপুর গ্রামের মৃত মিয়ার উদ্দিন পালোয়ানের ছেলে।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, “আমি ন্যায়বিচার চাই। বিয়ে করতে চাইলে কাবিনসহ বৈধভাবে বিয়ে করতে হবে। আমি কোনও অন্যায় করিনি, আমি আইনের মাধ্যমে সুবিচার চাই। এখন ফরিদের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে আশ্রয় নিলেও জীবন শঙ্কায় রয়েছি”।
ভুক্তভোগী তরুণী জানান, প্রায় দেড় বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো দেখা হয় তাদের। ফরিদের ডাকে সাড়া দিয়ে বিকেলে তিনি ঘোড়াশালে গেলে ফরিদ তাকে মোটরসাইকেলে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে অবশেষে রাতের বেলায় হরিদেবপুর গ্রামের একটি নির্জন বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ফরিদ। এরপর ৯ মার্চ ঢাকার মালিবাগের একটি বাসায় নিয়ে গিয়েও একইভাবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় সে।
তরুণী অভিযোগ করেন, ধর্ষণের পর বিয়ের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি ফরিদ। শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ফরিদ ঔষধ আনার কথা বলে তাকে যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে ফেলে উধাও হয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি ফরিদের গ্রামের বাড়ি হরিদেবপুরে গিয়ে আশ্রয় নেন। সেখানে ফরিদের মা-বোন ও আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে ওই গ্রামের একজনের সহযোগিতায় ওই রাতেই তিনি নিরাপদ আশ্রয় পান।
এ ঘটনার পর পরিবারের পরামর্শে গত ১২ মার্চ কালীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং ৯) দায়ের করেন, ভুক্তভোগী। মামলার প্রধান আসামি ফরিদ পালোয়ান ঘটনার পরপরই ইতালিতে পালিয়ে যায়।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন জানান, মামলার ১ নম্বর আসামি বিদেশে পলায়ন করায় তাকে গ্রেফতারে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি। তবে ওই মামলায় একজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।