অপু খান চৌধুরী। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় বিভিন্ন যানবাহনে ভাড়া নৈরাজ্য কমছে না। গত ঈদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার প্রবনতা এখনো অব্যাহত আছে।
বর্তমানে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন যানবাহনের চালকগণ স্থায়ী করার চেষ্টা করছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে, সকল যানবাহন চালক এক হয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে রেখেছে। কোন যাত্রী যদি প্রতিবাদ করলে তাকে অপমানসহ হেনস্থার স্বীকার হতে হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ব্রাহ্মণপাড়া - কমিল্লার ভাড়া ৫০ টাকা হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে নিচ্ছে ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত। এমনকি সন্ধার পর কুমিল্লা থেকে সিএনজি ভাড়া ১০০ টাকা অলিখিত ভাবে নির্ধারিত হয়ে আছে। ব্রাহ্মণপাড়া-মিরপুরের ভাড়া ৪০ টাকা হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে নিচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
এছাড়া, ব্রাহ্মণপাড়া-চান্দলা, চান্দলা-মিরপুর, ব্রাহ্মণপাড়া-সিদলাই, ব্রাহ্মণপাড়া-হরিমঙ্গল, ব্রাহ্মণপাড়া-বুড়িচংসহ প্রতিটি সড়কে যাত্রীদের কাছ থেকে পূর্বের চেয়ে অতিরিক্ত ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছে। কেউ ন্যাজ্য ভাড়া দিতে চাইলে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করা হয় এবং কোন যানবাহন তাকে নেওয়া হয়না। বুড়িচং- ব্রাহ্মণপাড়া সড়কে সিএনজি, অটুরিক্স্যার জিপি বন্ধের সুবিধার পরও চালকেরা এ ধরনের ভাড়া নৈরাজ্যের সৃষ্টি করছে। এতে সাধারণ যাত্রীসহ স্থানীয়দের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ঘটনায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অসাধু সিএনজি অটোরিকশা চালকদের বিরুদ্ধে জরিমানা ও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু এরপরও বন্ধ হয়না ভাড়া নৈরাজ্য। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থেকে কুমিল্লা গামী সিএনজি চালক মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের এই সড়কটি ভাঙ্গাচুরা থাকার কারণে ব্রাহ্মণপাড়া থেকে কুমিল্লা যেতে অতিরিক্ত সময়ে লাগে। এবং সিএনজির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ঘনঘন পরিবর্তন করার কারণে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই।
ব্রাহ্মণপাড়া থেকে চান্দলাগামী সিএনজি চালক সুমন মিয়া বলেন, সব সড়কের চালকেরা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। তাই আমিও নিচ্ছি। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে, ব্রাহ্মণপাড়া থেকে চান্দলার ভাড়া তিনি ৩০ টাকা বলে জানান। পূর্বের ভাড়া ২০ টাকা বলায় চালক বলেন, আগের দিন এখন আর নেই।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থেকে কুমিল্লা গামী যাত্রী শারমিন আক্তার বলেন, সিএনজি চালক ভাড়া ৮০ টাকা চাচ্ছে। এখন এ টাকায় যেতে হবে। তিনি ক্ষুভের সাথে বলেন এ সড়কে ভাড়ার বিষয়ে কোন অভিভাক নেই।
চান্দলা থেকে মিরপুর গামী যাত্রী আল আমিন জানান, ঈদের পূর্বেও ভাড়া ২০ টাকা ছিলো। এখন ৩০ টাকা নিচ্ছে। এখন তা দিয়ে যেতে হবে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে যাত্রী সাধারণের দাবী, ব্রাহ্মণপাড়ায় যেন অতি দ্রুত ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধ করা হয়।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা জাহান জানান, আমরা যানবাহনে নৈরাজ্য নিয়ে কয়েকদিন পর পর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি। কিন্তু এর কার্যকরী কোন রেজাল্ট পাচ্ছি না। যেহেতু সড়কে কোন সমিতি নেই এবং জিভির আওতায় নেই সুযোগে কিছু অসাধুচালক সুযোগ বুঝে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। সড়কে নৈরাজ্যের ব্যাপারে আমাদের ভ্রাম্যমান আদালত সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।