রাজশাহীর আমের হাটে বৃষ্টির প্রভাব! ক্ষতির মুখে আম ব্যবসায়ীরা

আপলোড সময় : ০১-০৬-২০২৫ ০২:৪০:৫৭ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০১-০৬-২০২৫ ০২:৪০:৫৭ পূর্বাহ্ন


মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে সবচেয়ে বড় আমের হাট বসে। এক সপ্তাহ আগেও এই হাটে যে আম ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে, সেই আম এখন বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা দরে। রাজশাহীতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে টানা বৃষ্টি হওয়ায় প্রভাব পড়েছে আমের মূল্যে।


চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির পানিতে গাছে আম দ্রুত পেকে যাচ্ছে। একদিকে সরবরাহ বেশি, অন্যদিকে ক্রেতা কম থাকায় দাম পড়ে গেছে। আম ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারের মতো একই চিত্র খুচরা বাজারেও। মৌসুমের মাঝামাঝি এ ধরনের বৃষ্টি আমের ফলনের ওপর প্রভাব ফেলে না, বরং বাজারে দাম কমার প্রবণতা তৈরি করে। এটি ক্রেতাদের জন্য ভালো হলেও চাষিদের জন্য আর্থিক ক্ষতির কারণ।


বানেশ্বর হাটে গিয়ে দেখা যায়, গোপালভোগ, হিমসাগর ও বিভিন্ন ধরনের গুটি আম বেচাকেনা হচ্ছে। হাটে প্রচুর আম উঠেছে। মহাসড়কের ধারে হাট বসায় এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বানেশ্বর বাজার পার হতে গাড়িগুলোকে বেগ পেতে হচ্ছে। বানেশ্বরের এই হাটে পুঠিয়া ছাড়াও দুর্গাপুর, বাঘা, চারঘাট, পবা, মোহনপুর, বাগমারাসহ জেলার সব উপজেলার আম ওঠে।


বৃষ্টি শুরুর আগে এখানে প্রতি মণ গোপালভোগ আম ২ হাজার থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। শুক্রবার বিক্রি হয়েছে দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। হিমসাগর বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকা মণ দরে। আর গুটি জাতের আম বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।


বানেশ্বর হাটে আম বিক্রি করতে আসা বাঘার বাবু বলেন, বৃষ্টি হওয়ায় গাছে আম পেকে যাচ্ছে। তাই গোপালভোগ জাতের পাঁচটি গাছের ৮০ ক্যারেট আম নিয়ে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার আমের দাম অনেক কম। গতবারের চেয়ে মণে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কম পাওয়া যাচ্ছে।


আম বিক্রেতা রনি ইসলাম বলেন, এখানে সকাল-বিকেল আমের বাজারদর কমবেশি হয়। বৃষ্টি শুরুর পর থেকে হাটে প্রচুুর আমের আমদানি। সে তুলনায় ক্রেতা কম। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় আম ঠিকমতো ঢাকায় পাঠানো যাচ্ছে না। গত বুধবারও ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা মণ দরে গোপালভোগ বিক্রি করেছি। শুক্রবার সেই আম দেড় হাজারে নেমে গেছে।


বানেশ্বর হাটের ইজারাদার রাসেল সরকার বলেন, হাটে এত আমের আমদানি যে রাখার জায়গা নাই। গতবারের চেয়ে এবার তিন গুণ আম বেশি। ক্রেতা নাই। বৃষ্টির কারণে এটা হয়েছে। তাই একেবারে দাম পড়ে গেছে। তবে কৃষি বিভাগ এখনো আশাবাদী।


তারা বলছে, এই ধাক্কা সাময়িক। বৃষ্টি কেটে গেলে দাম আবারও বাড়বে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, এবার আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদন বেশি বলে বাজারে সরবরাহ বেশি। ফলে দাম কিছুটা কমেছে। বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে আমের হাটে। বৃষ্টি কেটে গেলে দাম আবার বাড়বে। জেলা প্রশাসন ঘোষিত ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ১৫ মে সব ধরনের গুটি আম পাড়া শুরু হয়েছে। ২০ মে থেকে নামছে গোপালভোগ।


এ ছাড়া ২৫ মে রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ এবং শুক্রবার (৩০ মে) থেকে হিমসাগর নামানো শুরু হয়েছে। ১০ জুন থেকে ব্যানানা ও ল্যাংড়া আম নামানো যাবে। ১৫ জুন থেকে আম্ধসঢ়;্রপালি ও ফজলি, ৫ জুলাই বারি-৪, ১০ জুলাই আশ্বিনা ও ১৫ জুলাই থেকে গৌড়মতি আম পাড়া যাবে।


চলতি বছর রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে আমবাগান করা হয়েছে। হেক্টরপ্রতি সম্ভাব্য উৎপাদন ১৩ দশমিক ২৬ টন। মোট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ৬ টন। এবার শুধু রাজশাহী জেলা থেকে ১ হাজার ৬৯৫ কোটি ৮৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার আম বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।





 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ গোলাম মাওলা শাওন
মোবাইল : ০১৭১১-০০৬২১৪

অফিস :

প্রধান কার্যালয় : ৩১/১ শরীফ কমপ্লেক্স ৫ম তলা পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০

মোবাইল : ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০

ই-মেইল : [email protected],  [email protected]