সৌদি প্রবাসীকে ডাকাতি মামলায় ফাঁসানোর প্রতিবাদে স্বজন ও এলাকাবাসীর মানববন্ধন

আপলোড সময় : ২৭-০৪-২০২৫ ০৬:২৩:১৩ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৭-০৪-২০২৫ ০৬:২৩:১৩ অপরাহ্ন






রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি॥ বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের গরদ্বার গ্রামের শহিদুল ইসলাম মানিক(৫০) নামের এক সাবেক সৌদি প্রবাসীকে ডাকাতি মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আসামি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাকে মিথ্যা মামলায় আসামী ও গ্রেফতার করে হয়রাণির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন তার স্বজন ও এলাকাবাসী।



এসময় তারা মানিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। এছাড়া শহিদুল ইসলাম মানিককে “ভালো মানুষ” আখ্যা দিয়ে তাকে ডাকাতি মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করানোর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিন্দা ও  প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এদিকে তার গরদ্বার গ্রামের বাড়ির সামনের সড়কে ২৪ এপ্রিল বিকালে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভূক্তভোগী শহিদুল ইসলাম মানিকের স্বজন ও এলাকার কয়েকটি গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার সর্বস্তরের শত শত মানুষ অংশ নেয়। মানববন্ধনে তারা দাবি করেন শহিদুল ইসলাম মানিক ওই ডাকাতি ঘটনার সাথে জড়িত নন, তিনি অত্যন্ত ভদ্র, সৎ ও ভালো মানুষ, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে আসামী করা হয়েছে।



স্বজনরা জানান, বাইশারী ইউনিয়নের গরদ্বার গ্রামের মৃত বজলুর রহমান হাওলাদারের ১০ ছেলে মেয়ের মধ্যে ৩য় সন্তান শহিদুল ইসলাম মানিক। তিনি প্রায় দুই যুগ সৌদিতে প্রবাস জীবন শেষ করে ২০১৯ সালে  দেশে ফেরেন। বর্তমানে তিনি ডায়াবেটিস রোগসহ নানা জটিল রোগে ভূগছেন।



শহিদুল ইসলাম মানিকের মেয়ে সুমাইয়া ইসলাম শান্তা জানান, প্রবাসে থাকাকালে তার বাবা যে টাকা আয় করেছেন তা দিয়ে গাজীপুরের সফিপুরে সম্পত্তি কিনে বাড়ি ও দোকানপাট করেছেন। দোকান ও  বাড়ি ভাড়া থেকে তার বাবার মাসিক প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকা আয় হয়। যা দিয়ে তার বাবা-মায়ের সংসার স্বচ্ছলভাবে চলে যায়।


 

প্রসঙ্গত, শহিদুল ইসলাম মানিকের একমাত্র মেয়ের স্বামী শফিকুল ইসলাম সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে কর্মরত। মানিকের দুই ভাই সোহেল ও খায়রুল বর্তমানে সৌদিতে রয়েছেন। বড় ভাই বাবুল গাজিপুরে ইবনেসিনা ওষুধ কোম্পানীর ম্যানেজার ও  মেজ ভাই প্রকৌশলী বাদল ও আরেক ভাই জহিরুল দীর্ঘবছর  সৌদিতে প্রবাস জীবন কাটিয়ে বর্তমানে সপরিবারে গাজিপুরে বসবাস করছেন।



তাদের ৬ ভাই ও চার বোনের প্রত্যেকের ঢাকা ও গাজিপুরে নিজস্ব সম্পত্তিতে বাড়ি ও দোকান ঘর রয়েছে। এদের অনেকের একাধিক বাড়ি ও সম্পত্তিও রয়েছে। শহিদুল ইসলাম মানিকদের স্বচ্ছল ও মানবিক পরিবার গ্রামের অস্বচ্ছল ও দুস্থ পরিবারগুলোকে নানাভাবে সহায়তা করে থাকেন বলে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অনেকে জানান।



উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল  দিবাগত রাত দুইটা-আড়াইটার দিকে একদল ডাকাত উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দক্ষিণ বাইশারী গ্রামের দফাদার বাড়িতে হানা দিয়ে মিজানুর রহমান বাবুলের (বাবুল দফাদার) বসত বিল্ডিংয়ের জানালার গ্রিল কেটে ও রুমের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ।



এসময় তারা প্রথমে অস্ত্রের মুখে বাবুল দফাদারের মুখ ও হাত-পা বেধে ফেলে তাকে মারধর করে। পরে ৭/৮ জনের সশস্ত্র ডাকাত দল পাশের রুমে থাকা পুত্র বধু নুসরাত ও তার এক বছর বয়সী মেয়ে সামিয়ার গলায় ধারলো অস্ত্র ধরে ভয়ভীতি দেখিয়ে ষ্টীলের আলমিরা ও ওয়ারড্রপ,কাঠের ওয়াল শোকেস ও কয়েকটি ট্র্যাঙ্ক ভেঙ্গে নগদ প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা,২০/২১ ভরি স্বর্নালঙ্কার ও দুইটি মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মালপত্র লুট করে নিয়ে যায়। ২২ এপ্রিল বিকালে মিজানুর রহমান বাবুল বাদী হয়ে শহিদুল ইসলাম মানিক (৫০) ও কালু (৩০) নামের দুইজনকে সুনির্দিষ্ট ও ৫/৭ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে বানারীপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন।



এর আগে, ওই দিন (২২ এপ্রিল) সকালে বানারীপাড়া পৌর শহরের বন্দর বাজার এলাকা থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে শহিদুল ইসলাম মানিককে আটক করা হয় এবং পরের দিন ২৩ এপ্রিল তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বরিশাল জেল হাজতে পাঠানো হয়।



এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোস্তফা বলেন, মিজানুর রহমান বাবুল বাদী হয়ে তার বাড়িতে সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় শহিদুল ইসলাম মানিককে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে বরিশাল জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ডাকাতির রহস্য উদঘাটনে তদন্ত ও এরসঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে এলাকাবাসী ও স্বজনরা অনতিবিলম্বে শহিদুল ইসলাম মানিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।






 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ গোলাম মাওলা শাওন
মোবাইল : ০১৭১১-০০৬২১৪

অফিস :

প্রধান কার্যালয় : ৩১/১ শরীফ কমপ্লেক্স ৫ম তলা পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০

মোবাইল : ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০

ই-মেইল : [email protected],  [email protected]