রাজশাহী প্রতিনিধি: প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি দেখিয়ে রাজশাহী মহানগরীতে দিন-দুপুরে চলছে পুকুর ভরাট কার্যক্রম। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বেলা ১২টায় মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার কেদুরমোড় বৌ বাজার এলাকায় প্রায় ৮কাঠা আয়তনের জোড়া পুকুর নামের পুকুরটি ভরাট করছে স্থানীয় ডিকে বাবু। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ড্রাম ট্রাক করে জৈনিক সবুর ভরাট বালু ফেলছেন পুকুরটিতে। পুকুর ভরাটের বিষয়ে কোন অনুমোদন পত্র আছে কিনা ? জানতে চাইলে তিনি মারমুখি আচারণ করে বলেন, না কোন অনুমতি নাই। এসময় জৈনিক সবুর দাম্ভিকতা দেখিয়ে বলেন, দেশে কি আর এখন প্রধানমন্ত্রী আছে? না আছে কোন নেতা, না আছে সাংবাদিক। এই ধরনের সাংবাদিকদের দিয়ে কি হবে। দেশ দেশের মতো চলে যাবে। চুপ করে ভরাট করে নে, কেউ থামাতে পারবে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার এক ব্যক্তি জানান, জৈনিক ডিকে বাবু প্রভাব খাটিয়ে ড্রাম ট্রাকের মাধ্যমে পুকুর ভরাট করছেন। প্রশাসনের বাধা এলে কিছুদিন কাজ বন্ধ রাখে, পরে আবার শুরু করে। ইতিমধ্যে পুকুরের কিছু অংশ ভরাট হয়ে গেছে। এর আগে আমরা রাতের বেলায় পুকুর ভরাট হতে দেখেছি, কিন্তু আজকে দিন-দুপুরে প্রভাব ঘাটিয়ে পুকুরটি ভরাট করছে। বৃহস্পতিবার সকালে বোষপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে পুকুর ভরাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই পুকুরটি ভরাটের সাথে ওপরের রাজনৈতিক মহল জড়িত থাকায় আমার কিছু করার নেই।
উল্লেখ্য কেদুরমোড়ের এই পুকুর বোষপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ মিটার উত্তরে।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), মোস্তাক আহমেদকে অবগত করলে তিনি বলেন, আমি মাত্র থানায় যোগদান করেছি। আমি আইসি’কে বলে দিচ্ছি, তিনি ব্যবস্থা নিবেন। এরপর কোন প্রকার পদক্ষেপ না দেখে বোয়ালিয়া জোনের এডিসিকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জানি। এর আগে পুকুর ভরাট বন্ধ করে দিয়েছিলাম। সেই সাথে তাদের কঠোরভাবে নিষেধ ও করেছিলাম। কিন্তু আজ পুকুর ভরাট হচ্ছে বিষয়টি আমার জানা ছিল না, আমি ওসিকে বলে দিচ্ছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
এরপর বোষপাড়া পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জকে মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি বলেন, ভাই বিষয়টি আমি জানি। এর আগে আমি নিজে দাড়িয়ে থেকে তাদের পুকুর ভরাট বন্ধ করেছি। কিন্তু তারা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়। এরপর একদিন আমি পুকুর ভরাট বন্ধ করতে গেলে, তারা পাল্টা আমাকে প্রশ্ন করে বসে যে, আপনাকে কেউ অভিযোগ দিয়েছে ? যে এইখানে এসেছেন। অভিযোগ নিয়ে আসেন তারপর দেখা যাবে। এরপর যদি আসেন তাহলে আপনার চাকরি- বাকরি খেয়ে দেব। এমন ধরনেরও হুমকি দেয় বলে জানান আইসি। পুলিশ হওয়ার পরও আপনাকে হুমকি দিলো আপনি কোন ব্যবস্থা নেননি কেন? এমন প্রশ্নে উত্তরে তিনি বলেন, ভাই আমার আর কি করার আছে বলেন। তার থেকে এলাকার কাউকে দিয়ে একটা অভিযোগ করান। অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে শেষ পর্যন্ত অন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পুকুর ভরাট কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সাংবাদিক পুলিশ পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শুধু কুটুক্তি আর হুমকি পেল। পেশী শক্তির কাছে সকলেই অসহায় এটাই প্রমানিত হলো।