ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক গুরুত্বপূর্ণ মোহাম্মদপুর থানার বিতর্কিত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসানসহ তিন পরিদর্শককে বদলি করা হয়েছে। রবিবার (২৪ আগস্ট) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে এ নির্দেশ কার্যকর হবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তার বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার ঘটনা রয়েছে। বিশেষ করে ১০ লাখ টাকার মাদক মামলা গায়েব হয়ে যাওয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সাধারণ মানুষ কয়েক দফায় মোহাম্মদপুর থানার সামনে মানববন্ধন করে তার অপসারণ দাবি করেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ওসি আলী ইফতেখারের নেতৃত্বে এলাকায় অপরাধ দমন নয়, বরং অপরাধ চক্র আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। জনগণের এই আন্দোলনের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।
অভিযোগ রয়েছে, ওসির সমর্থনে মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকায় জেনেভা ক্যাম্পের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় কিশোর গ্যাং সদস্যদের দিয়ে পাল্টা মানববন্ধন করানো হয়। ফলে স্থানীয়দের ক্ষোভ আরও বাড়ে এবং ওসির ভূমিকা নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
ডিএমপির এই হঠাৎ বদলি পদক্ষেপে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভ্যন্তরে প্রশাসনিক শুদ্ধি অভিযান চলছে কিনা এমন প্রশ্ন উঠেছে। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, জনগণের চাপ, গণমাধ্যমে সমালোচনা এবং বিভিন্ন মহলের উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মোহাম্মদপুর থানা দীর্ঘদিন ধরেই মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতার কারণে ভুগছে। এ অবস্থায় বিতর্কিত ওসি আলী ইফতেখারকে সরিয়ে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনায় তারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে একইসঙ্গে তারা দাবি করেছেন এলাকার প্রকৃত অপরাধী চক্রগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে বদলির মতো প্রশাসনিক পদক্ষেপে বাস্তব পরিবর্তন আসবে না।
মোহাম্মদপুর থানার ওসিকে ঘিরে দীর্ঘদিনের বিতর্ক এবং জনআন্দোলনের মুখে ডিএমপির এই বদলি আদেশকে অনেকেই ইতিবাচক উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন। তবে এখন দেখার বিষয়-নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন।