ঢাকা , রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫ , ৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীর পবায় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কৃষকের ভিটা দখলের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট সময় : ২০২৫-০৮-২৪ ১৪:১৩:০০
রাজশাহীর পবায় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কৃষকের ভিটা দখলের অভিযোগ রাজশাহীর পবায় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কৃষকের ভিটা দখলের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: রাজশাহীর পবা উপজেলার দারুশা রাধানগর এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত মিনারুল ইসলাম ও রাজু আহম্মেদের বিরুদ্ধে এক কৃষকের ভিটা জমি জোরপূর্বক দখল করে পুকুর খননের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি বলে জানা গেছে।


ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল রউফের অভিযোগ, তাকে কোনো টাকা না দিয়েই তার জমি দখল করে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাকে বলা হয়েছিল টাকা দিয়ে জমি কিনবে। কিন্তু জমির অন্য মালিককে নামমাত্র টাকায় রেজিস্ট্রি করলেও আমি কোনো টাকা পাইনি। রাজি না হওয়ায় এমপির প্রভাবের কাছে টিকতে পারিনি। বছরের পর বছর ধরে ন্যায়বিচারের জন্য ঘুরেও কোনো ফল পাননি বলে দাবি করেন তিনি। 


আব্দুল রউফ বলেন, এখন আমার ভিটা জমিতে মিনারুল আর রাজুর পুকুর। পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোনোমতে বেঁচে আছি।


তার ছেলে মোঃ রাসেল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে তারা গত ২৪ জুলাই ২০২৫ আরএমপি কর্ণহার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর সহযোগিতা পাননি। তিনি আরও বলেন, জমি হারিয়ে আমরা শঙ্কায় আছি। আইন আজ টাকার কাছে অন্ধ।


এলাকাবাসীর অভিযোগ, হত্যা মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও মিনারুল ইসলাম প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। একাধিক গ্রামবাসী ক্ষোভ


প্রকাশ করে বলেন, যে মানুষ আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে, সে এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ পুলিশ ধরছে না। কেন এই নীরবতা?”


অভিযোগ রয়েছে, রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিনের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে মিনারুল ও রাজু এলাকায় কৃষকদের জমি দখলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন।


স্থানীয়দের দাবি, বহু কৃষককে নামমাত্র মূল্যে বা কোনো টাকা না দিয়েই তাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।


এ বিষয়ে জানতে হজরিপাড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ ইসাহাক আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জমি দখল করে পুকুর খননের বিষয়ে তাকে কেউ কোনো অভিযোগ জানায়নি। তবে তিনি স্বীকার করেন যে, ওই জমিতে অনেক আগে থেকেই একটি পুকুর রয়েছে।


অন্যদিকে, ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তিনি বলেন, আজ ইউনিয়ন অফিস বন্ধ, আমি দাওয়াত খেতে এসেছি। সব সময় ফোন করবেন না, বলে ফোন কেটে দেন তিনি ।


অভিযুক্ত মিনারুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 


তবে স্থানীয়রা জানান, তিনি আত্মগোপনে থাকার কথা বললেও প্রতিদিনই এলাকায় ঘোরাফেরা করেন এবং রাতে নিজের বাড়িতেই থাকেন।


এ বিষয়ে কর্ণহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাবুব জানিয়েছেন, ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তারা অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
রাজশাহীর পবা অঞ্চলে কৃষিজমি দখল করে পুকুর খননের ঘটনা নতুন নয়। বিভিন্ন সময়ে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। ফলে এলাকার কৃষি ও পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 


 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ