মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে দুইদিন আগে ভর্তি হন বড়ো ননদ। ননদকে দেখতে বড়ো জা হাসুরা বেগম (৫৫), মেজো জা শরিফা বেগম (৩৮), ছোটো ননদ রাশিদা (৩৬), বড়ো কন্যা বৃষ্টি বেগম (২৩) কে সাথে নিয়ে গতকাল (৫ আগস্ট) রাত ৮ টার দিকে হাসপাতালে যান শরিফা বেগম (৪০)।
হাসপাতালে বড়ো ননদকে দেখে তাঁরা একটি ভ্যানযোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। রওনা দেওয়ার কিছুক্ষণ পর আনুমানিক রাত সোয়া ৯ টার দিকে রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের গোপালহাটি এলাকায় আল ইনসানিয়াহ্ ইসলামী একাডেমী (হাই স্কুল) অতিক্রম করার সময় অজ্ঞাত একটি গাড়ি তাঁদের ভ্যানকে সজোরে ধাক্কা দেয়।
এতে, করে ভ্যানটি যাত্রীসহ সড়কের বাম পাশের নালায় ছিটকে পড়ে। এলাকাবাসী, পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা ভ্যানচালকসহ ৫ জন যাত্রীকে গুরুতর আহত অবস্থায় নালার পানি থেকে উদ্ধার করে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন।
হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত শরিফা বেগম (৪০), স্বামী: মোঃ মাহাবুর, গ্রাম: তারাপুর, থানা: পুঠিয়া, জেলাঃ রাজশাহীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
গুরুতর জখম এবং আঘাতপ্রাপ্ত মোসাঃ হাশুরা (৫৫), স্বামী: মোঃ ইব্রাহীম, গ্রাম: দৈপাড়া। মোসাঃ শরিফা বেগম (৩৮), স্বামী: মোঃ মালেক, গ্রাম: তারাপুর। মোসাঃ রাশিদা বেগম (৩৬), স্বামী: মোঃ আসলাম, গ্রাম: তারাপুর। মোসাঃ বৃষ্টি খাতুন (২৩), স্বামী: মোঃ মিজান, গ্রাম: তারাপুর। ভ্যানচালক মোহাম্মদ আলী (৩২), পিতা: শাহজাহান, গ্রাম: পশ্চিম দৈপাড়া।
সর্ব থানা: পুঠিয়া, জেলা: রাজশাহীগণকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন, কর্তব্যরত চিকিৎসক।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভ্যানচালক মোহাম্মদ আলী রাত (৬ আগস্ট) ১২:১০ মিনিটে মারা যান। আজ বেলা আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হাসুরা বেগম। আহত অপর ৩ জন রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
পবা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক কাজী আজ সন্ধ্যায় বলেন, দুর্ঘটনায় ৩ জন মানুষ নিহত হয়েছেন, এটি খুবই দুঃখজনক! প্রত্যক্ষদর্শী না-থাকায় ঘাতক যানবাহনটিকে এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি।
আহত ব্যক্তিদের সাথে কথা হয়েছে। তাঁরা পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারছেন না। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, কিছুটা সময় হয়তো লাগবে তবে শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।