রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি॥
তাহিদুল ইসলাম (২২)। ছিলেন টকবগে অমিত সাহসী এক তরুণ। স্বপ্ন ছিল তার উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে "মেধার" যোগ্যতায় ভালো কোন চাকরিতে যোগদান করবেন। দরিদ্র পিতা-মাতার সংসারে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য আনবেন।
কোটা বিরোধী আন্দোলনের সন্মূখ সারির যোদ্ধা ছিলেন তিনি। বরিশাল বিএম কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নের দক্ষিণ বড় চাউলাকাঠি গ্রামের দরিদ্র কৃষক আ.মন্নান সরদারের ছেলে মো.তাহিদুল ইসলাম। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভূত্থানে বুলেটবিদ্ধ হয়ে নির্মমভাবে শহীদ হন তিনি।
তাকে হারিয়ে পরিবারে এখনও বইছে শোকের মাতম। তার বাবা-মা ও স্বজনরা আজও চোখের জলে ভাসেন। তাহিদুল ইসলাম গত বছরের ৪ আগস্ট বিকালে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় পুলিশ ও ছাত্র-জনতার সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ।
৬ আগস্ট সকালে দু’দফা জানাজা শেষে বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নের দক্ষিণ বড় চাউলাকাঠি গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে চির নিন্দ্রায় শায়িত করা হয়।
তাহিদুল ইসলামের বাবা কৃষক আ.মন্নান সরদার ও মা লাভলী বেগম ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে ধরে কান্নাবিলাপ করে বলেন, "বুকের ধন পোলাডারে হারাইয়া মোগো জীবনের সব সুখ চিরতরে নিঃশেষ হইয়া গেছে। অরে নিয়া মোগো কত স্বপ্ন ছিল। সেই প্রাণপ্রিয় পোলাডা অন্ধকার মাটির কবরে চিরতরে ঘুমাইয়া আছে। আইজ একটা বছর অর মুখটা দেহিনা। প্রতিদিন ওর কবরের কাছে গিয়া চোহের পানিতে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করি। তিনি যেন অরে বেহেস্তবাসী করেন।"
এদিকে, শহীদ তাহিদুল ইসলামের দরিদ্র কৃষক বাবা আ.মন্নান সরদার তার বড় ছেলে তারিকুল ইসলামের জন্য সরকারের কাছে একটি চাকরির দাবি জানিয়েছেন।