ঢাকা , বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫ , ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দু’ উপজেলার মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে বদরগঞ্জে চিকলি নদীর ভাংড়িরঘাটে অবশেষে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু


আপডেট সময় : ২০২৫-০৭-২২ ২১:৫৯:০৩
দু’ উপজেলার মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে বদরগঞ্জে চিকলি নদীর ভাংড়িরঘাটে অবশেষে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু দু’ উপজেলার মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে বদরগঞ্জে চিকলি নদীর ভাংড়িরঘাটে অবশেষে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু
 

বদরগঞ্জ রংপুর- স্বাধীনতার ৫৪ বছরে এসে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার চিকলি নদীর ভাংড়িরঘাটে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ফলে বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলার লাখো মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। আর ব্রিজটি নির্মিত হলে বদরগঞ্জ উপজেলা শহরের সাথে দামোদরপুর ইউনিয়ন ও তারাগঞ্জ উপজেলার সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

 
জানা যায়, দামোরদরপুর ইউনিয়ন নদীবেষ্টিত এলাকা। যমুনেশ্রী, চিকলী, আখিরা খালসহ বিভিন্ন নদী-নালা ওই ইউনিয়নকে নানাভাগে বিভক্ত করে রেখেছে। একারণে ওই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের প্রকৃতির সাথে অনেকটা যুদ্ধ করেই বেঁচে থাকতে হয়। তবে ওইসব নদীর দু’ একটি জায়গায় ব্রিজ হলেও ভাংড়ির ঘাটে আজ পর্যন্ত ব্রিজ নির্মিত হয়নি।


অথচ শত প্রতিকুলতার মাঝেও ভাংড়িরঘাট দিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার করেন, দামোদরপুর ইউনিয়নসহ তারাগঞ্জ ও নীলফামারির কিশোরগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। স্বাধীনতার পর থেকে এসব এলাকার মানুষ ভাংড়ির ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসলেও কোন কাজ হয়নি। বরং ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বার বার জনগণের ভোট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নেতারা। এরপর তারা ব্রিজ নির্মাণের বিষয়টি বেমালুম ভুলে গেছেন। এভাবেই কেটে গেছে প্রায় ৫৪ বছর। 

 
অবশেষে ব্রিজটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো)’র তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমাÐ এলাকায় পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় চিকলী নদীতে ওয়ার কাম রেগুলেটর কাম ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে, ৩৬ কোটি ৪৬ লাখ ২১ হাজার টাকা। চিকলী নদীতে ৪৮ মিটার দীর্ঘ ও ৪ মিটার প্রস্থের একটি ব্রিজ ছাড়াও ¯øুইস গেইট নির্মিত হবে। ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাসান অ্যাÐ ব্রাদার্স ব্রিজটি নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছে।


ইতোমধ্যে নানা যন্ত্রপাতি নিয়ে কিছু নির্মাণ শ্রমিক সেখানে অবস্থান করছেন। ৪জুন আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরুর কথা থাকলেও এখনো তা’ শুরু করা হয়নি। তবে কিছু আনুসাঙ্গিক কাজ শুরু করেছেন শ্রমিকরা। একারণে ২০২৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর ব্রিজ নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। 


পাউবো’র উপসহকারী প্রকৌশলী জাহিদ হাসান জানান, ব্রিজটি নির্মিত হলে এক প্রান্তের মানুষের সাথে অন্য প্রান্তের মানুষের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এছাড়া এলাকার জেলে ও চাষীরা বিশেষভাবে লাভবান হবেন। এর পাশাপাশি স্থানটি দর্শণীয় স্থানে পরিণত হবে।

 
এলাকা পরিদর্শণকালে কথা হয় স’মিল মালিক নাজমুল ইসলামের সাথে। তিনি শুধুমাত্র কয়েক মিটারের এ ব্রিজটি নির্মিত না হওয়ায় হাজার হাজার মানুষকে ৮ কিলোমিটার ঘুরে বদরগঞ্জ উপজেলা শহরে যেতে হয়। ৫৪ বছর ধরে এভাবেই কষ্ট করছেন লাখো মানুষ। একারণে অনেক সময়ই ক্ষোভে ও কষ্টে অনেককেই গালমন্দ করেছি। কিন্তু ব্রিজটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ায় সব ক্ষোভ ও কষ্ট ভুলে গেছি। একই কথা বলেন, শেখেরহাট ব্যাপারীপাড়ার ব্যবসায়ী রোমান আলী, মোস্তফাপুর এলাকার গুদামপাড়ার ফনি চন্দ্র দাস।


শেখেরহাটের রেজাউল হক বলেন, বদরগঞ্জ-শেখেরহাট সড়কটি শুধু ইউনিয়ন-উপজেলা সংযোগ সড়ক নয়; এটি নীলফামারির কিশোরগঞ্জ উপজেলার সাথেও সরাসরি সংযুক্ত। ঘাট ইজারাদার আফজাল হোসেন বলেন, জন্মের পর থেকে শুনি ভাংড়ির ঘাটে ব্রিজ হবে। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে এসে তার বাস্তবায়ন দেখতে পেয়ে ভালোই লাগছে। 

 
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, আমি পাউবো’র প্রকৌশলীকে বলেছি আমি থাকাকালেই যেন ব্রিজটি নির্মিত হয়। আমি হেঁটে ওপারে যেতে চাই এবং এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাই। কারণ ব্রিজ নির্মাণের দাবী লাখো মানুষের প্রাণের দাবী। এটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্মিত হোক এটা সবার চাওয়া।





 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ