রনি মিয়া, স্টাফ রিপোর্টারঃ
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলাবাসীর হৃদয়ের সাথে জড়িয়ে থাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ অফিস (পিডিবি) হঠাৎ করে সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে ইনাতনগরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তে ফুঁসে উঠেছে সাধারণ জনতা। আওয়ামী লীগ সরকারের চলমান মেয়াদে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও জনবিরোধী সিদ্ধান্তকে “ফ্যাসিবাদী সুবিধাভোগীদের স্বার্থে গৃহীত একটি চক্রান্ত” বলে আখ্যা দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
সিদ্ধান্তটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঝড় উঠেছে। সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, বিদ্যুৎ গ্রাহক ও তরুণ সমাজ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। সবাই একবাক্যে বলছেন-এই জনদুর্ভোগময় সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মানা হবে না। অবিলম্বে সিদ্ধান্ত বাতিল না করা হলে আন্দোলনের জোয়ার ঠেকানো যাবে না।
এই প্রেক্ষাপটে শনিবার, ১৯ জুলাই বিকেল ৪টায় জগন্নাথপুর পৌর পয়েন্টে বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী, বিদ্যুৎ গ্রাহক, তরুণ সমাজ ও সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন প্রতিবাদ জানাতে।
সভাপতিত্ব করেন জগন্নাথপুরের বিশিষ্ট মুরব্বী আবুল লেইছ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক আব্দুল ওয়াহিদ। বক্তব্য রাখেন-প্রতিবাদী কণ্ঠে ব্যবসায়ী ফারুক আহমদ ও হাবিবুর রহমান হাবিল, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাংবাদিক আমিনুর রহমান জিলু, সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আলী হোসেন খান, বাজার তদারকি কমিটির জয়েন্ট সেক্রেটারি লিটন মিয়া, সমাজসেবক মামুনুর রশীদ মামুন এবং সংগঠক আলী আকবর প্রমুখ।
এসময় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রুয়েল হোসেন, সাংবাদিক হুমায়ুন কবির, সাংবাদিক রিয়াজ রহমান সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ও প্রতিবাদী জনতা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, বিদ্যুৎ অফিস সরিয়ে ইনাতনগরে নেওয়া মানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি প্রতারণা। এই সিদ্ধান্ত মানে বৃদ্ধ মা-বোনদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিকশা-ভ্যানে দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা, ব্যবসায়ীদের কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি, হাজারো সাধারণ গ্রাহককে হয়রানির মুখে ফেলা।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি কোনো প্রকারে বিদ্যুৎ অফিস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়, তবে সারা জগন্নাথপুর জুড়ে সর্বস্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে কঠোর গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
মানববন্ধন শেষে অংশগ্রহণকারীরা একযোগে স্লোগান দেন-বিদ্যুৎ অফিস সদরে চাই, ইনাতনগরে নয়, নয়, নয়! জনগণের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান দূরে সরিয়ে নয়, জনগণের কণ্ঠস্বর শুনতে হবে! জনতার এমন ঐক্যবদ্ধ অবস্থান দেখে সাধারণ মানুষ আশাবাদী-সঠিক পথে প্রতিবাদ জানিয়ে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন সম্ভব।