ঢাকা , সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫ , ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বদরগঞ্জে রাস্তায় ভারি যানবাহন না চালানোর অনুরোধ করায় প্রভাবশালী কর্তৃক বাড়িঘরে হামলা অগ্নিসংযোগ


আপডেট সময় : ২০২৫-০৭-১৩ ০৮:৫৮:৫৮
বদরগঞ্জে রাস্তায় ভারি যানবাহন না চালানোর অনুরোধ করায় প্রভাবশালী কর্তৃক বাড়িঘরে হামলা অগ্নিসংযোগ বদরগঞ্জে রাস্তায় ভারি যানবাহন না চালানোর অনুরোধ করায় প্রভাবশালী কর্তৃক বাড়িঘরে হামলা অগ্নিসংযোগ

 
বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি।
 
 
রংপুরের বদরগঞ্জে রাস্তায় ভারি যানবাহন না চালানোর অনুরোধ করায় প্রভাবশালী কর্তৃক বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট, অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও ভুক্তভোগী বেলালের শয়ন ঘরের পিছনে গরুর গোবর, ময়লা আর্বজনা ফেলিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ছবির ও তার লোকজন। এতে বাড়ির পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। 
 
 
এঘটনায় থানাসহ নানা জায়গায় অভিযোগ দিয়েও মেলেনি সুবিচার। তবুও সুবিচারের আশায় বিভিন্ন প্রশাসন দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন ভুক্তভোগী বেলাল হোসেন। শনিবার(১২জুলাই) দুপুরে দামোদরপুর ইউনিয়নের শেখেরহাট এলাকার কুমারপাড়াস্থ নিজ বাসায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ দাবী করেন। এসময় তার সাথে ছিলেন পরিবারের অন্য সদস্যরা।
 
 
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অনেকদিন আগে বেলালের বাবা নূরুল ইসলামের কাছ থেকে প্রতিবেশী আলিম উদ্দিন জমি কিনে বাড়ি তৈরি করে তিন স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু তার যাতায়াতের রাস্তা ছিলনা। ওই পরিবারে সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় মানবিক কারণে তাদের রাস্তা দেয়া হয়।
 
 
কিন্তু ২০২০ সালে আলিম উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার বড়ছেলে ছবির হোসেন ভরা বর্ষায় ওই রাস্তা দিয়ে ভারি যানবাহন যাওয়া আসায়  খানাখন্দের  সৃষ্টি হয়। একারণে তাকে ওই রাস্তা দিয়ে ভারি যানবাহন না চালানোর অনুরোধ করা হয়। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ছবির হোসেন। একারণে তার নেতৃত্বে পরিবারের অন্যরা বেলালের পরিবারের লোকজনের উপর হামলা চালায়।
 
 
বিষয়টি থানায় অভিযোগ দেয়া হলে পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। ২০২৩ সালে ছবির বেলালের বাড়ি দখলে নিতে আবারো হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এনিয়ে থানায় অভিযোগ হলে উভয় পক্ষকে পুলিশ ডেকে নেয়। এরপর কাগজপত্র যাচাই করে বেলালের বাড়ির দক্ষিণ দিকে রাস্তার জন্য তিন শতক জমি উভয় পক্ষকে ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। বিষয়টি তিনশ’ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিপিবদ্ধ করা হয়।
 
 
কিন্তু ২০২৪ সালে ছবির গং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সাহায্যে আবারো বেলালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুরের পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। ফলে বেলাল ৯৯৯-এ কল করলে বদরগঞ্জ থানা পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং উভয় পক্ষকে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার পরামর্শ দেয়। তবে বেলালের অভিযোগপত্র গ্রহণ করতে পুলিশ অস্বীকৃতি জানায়। ফলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। এতে আবারো ক্ষিপ্ত হয়ে ছবির গং তার পানি নিষ্কাশনের পাইপ ভেঙে ফেলে এবং উঠনের বেশকিছু গাছপালা ভেঙ্গে দেয়। এবিষয়ে আবারো তিনি পুলিশের শরনাপন্ন হন। কিন্তু পুলিশ বরাবরের ন্যায় অপারগতা প্রকাশ করে।
 
 
ফলে বেলাল বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। জেলা প্রশাসক বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেন। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেলা প্রশাসককে কিছু না বললেও বেলালকে সাফ জানিয়ে দেন এসব তার কাজ নয়। ফলে নিরূপায় বেলাল আবারো জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করলে তাকে এবার  ডিএম এর কাছে পাঠানো হয়।
 
 
ডিএম বিষয়টি শুনে ফোন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। বেলাল এবারও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ছুটে যান। কিন্তু এবার তাকে বলা হয় এটা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাজ নয় এটা আদালতের বিষয়। তাই বেলাল হোসেন আদালতে ১০৭ ধারায় ও ১৪৪ ধারায় দুটি মামলা করেন। মামলায় আসামীরা মুচলেকা দিয়ে জামিনে এসে উঠানের বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা কেটে ফেলার পাশাপাশি জমি দখলে নেয়ার আবারো চেষ্টা চালায়।
 
 
এছাড়া উঠানসহ ঘরের পাশে গর্ত করে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলতে থাকে- যা এখনো অব্যাহত আছে। বিষয়টি পুলিশকে অবগত করলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং একজন এএসআই তাকে গর্ত ভরাটের জন্য নির্দেশ দেন। সংবাদ সম্মেলনে বেলাল বলেন, বর্তমানে আমার পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজন প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 
 
 
এদিকে ছবির হোসেনের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই জমি আমাদের। তবে এর স্বপক্ষে তিনি কোন প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
 
 
 
 
 
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ