মো: গোলাম কিবরিয়া, রাজশাহী বিশেষ প্রতিনিধি- রাজশাহীতে দুই কোটি টাকা পাওনা নিয়ে মামা-ভাগনের বিরোধের জেরে এক যুবককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। নগরীর এয়ারপোর্ট থানায় এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী। তবে অভিযুক্ত মামা ঠিকাদার ওয়াসিমুল হক তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদার ওয়াসিমুল হকের কাছে দুই কোটি টাকা পাওনা ভাগনে আল ফারুক আহমেদ নতুনের। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টাকা পরিশোধের কথা বলে নতুনকে ডেকে নেয়া হয় পবা উপজেলার ভুগরইল এলাকায় ওয়াসিমুল হকের কার্যালয়ে। সেখানে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে নতুনকে মারধর করা হয়।
নতুনের স্ত্রী শিক্ষানবিশ আইনজীবী তানিয়া খাতুন এয়ারপোর্ট থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, মারধরে অংশ নেন ওয়াসিমুলের ভাই জয়নাল আবেদীন (৫৫), ওহাব আলী (৫২), তাদের ছেলে কাওছার আলী (২৬) ও মো. লিটন (৩০)। কাওছার লোহার রড দিয়ে আঘাত করলে নতুন গুরুতর জখম হন।
লিটন কাঠের চলা দিয়ে আঘাত করেন, এবং জয়নালের আঘাতে তার মুখে রক্তাক্ত জখম হয়। এরপর কাওছার নতুনের কাছে থাকা নগদ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগে বলা হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত নতুনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আইনজীবী তানিয়া খাতুন বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে মামার কাছে টাকা পাওনা। বারবার চাওয়ার পর মঙ্গলবার চেম্বারে ডেকে নিয়ে তাকে পেটানো হয়েছে। এখন আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। তারা সবাই জামিনে থাকা মামলার আসামি। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
অভিযোগে বলা হয়, মারধরকারীদের একজন জয়নাল আবেদীন ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
অভিযোগ অস্বীকার করে ওয়াসিমুল হক বলেন, ‘নতুন আমার কাছে কোনো টাকাই পায় না। বরং সে যুবলীগের পদধারী নেতা হয়েও বাইরে থাকে। সে আমার চেম্বারে ভাঙচুর করতে এসেছিল, লোকজন তাকে প্রতিহত করেছে। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আমরাও মামলা করব।’
ওয়াসিমুল পেশায় একজন ঠিকাদার। আওয়ামী লীগের সময় রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ওয়াসিমুল রাজশাহীর পবা ও মোহনপুর এলাকায় একচেটিয়া ঠিকাদারি পেয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। তার কিছু কাজ এখনও চলমান। পবার নওহাটা পৌরসভায় ২০ কোটি টাকার ১০টি রাস্তার কাজের মেয়াদ তিন দফা বাড়িয়েও শেষ করতে পারেননি তিনি। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে ইতিমধ্যেই কয়েকটি রাস্তা ধসে পড়েছে।
রাজশাহী এয়ারপোর্ট থানার ওসি ফারুক হোসেন বলেন, ‘নতুনকে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে।