ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫ , ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাউফলে টানা বর্ষণে ফসলের ব্যপক খয়ক্ষতি, দুঃশ্চিন্তায় কৃষক। 


আপডেট সময় : ২০২৫-০৭-১০ ০০:৩৪:২৬
বাউফলে টানা বর্ষণে ফসলের ব্যপক খয়ক্ষতি, দুঃশ্চিন্তায় কৃষক।  বাউফলে টানা বর্ষণে ফসলের ব্যপক খয়ক্ষতি, দুঃশ্চিন্তায় কৃষক। 
 
 
নুরুল আমীন আজাদী , বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফলে টানা ৪র্থ দিনের বর্ষণে কৃষি ফসলী জমীর ব্যপক খয়-ক্ষতি হয়েছে। গত রবিবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। তলিয়ে গেছে বীজতলা ও মাছের ঘের। হুমকিতে রয়েছে মুরগী খামার। বৃষ্টি চলতে থাকলে কি হবে কিছুই জানেন না কৃষক।
 
 
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, ১২শত ২ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের বীজতলা তৈরি করা হয়। এরমধ্যে ৫শত ৪০হেক্ট বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ২হাজার ৮শত ২১ হেক্টর জমিতে রোপা আউশ চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৮শত ৪৬ হেক্টর জমির ধান ক্ষতির মধ্যে পরেছে। সব্জি ২৫০ হেক্টর এরমধ্যে ১৮৮ হেক্টর ক্ষতির মুখে রয়েছে। পানের বরজ ৩৮ হেক্টর, কলা ১৭ হেক্টর, পেপে ১০ হেক্টরসহ সকল উৎপাদনই বর্ষণে ক্ষতির মুখে পরেছে। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের। ২শতাধিক মৎস্য খামারি আশিংক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এছারাও মুরগী খামারী রায়েছেন হুমকির মুখে। টানা বর্ষণ চলতে থাকলে মুরগী খামারে নানা রোগবালাই দেখা দিতে পারে বলে আশংকা করছেন খামার মালীকরা।
 
 
দাসপাড়া ইউনিয়নের খামারী মো রিপন জানান, ৩ একরের বেশি জমিতে তার মাছের ঘের ও মুরগীর খামার রয়েছে। টানা বর্ষণে কয়েকটি পুকুর তলিয়ে গেছে। কৈ মাছের চাষ করছেন তিনি। ঘের তলিয়ে গেলে মাছ হেঁটে অন্যত্র চলে যায়। তাই রাতভর সজাগ থেকে ঘের পাহারা দিতে হচ্ছে তাকে। নতুন করে মাটি কেটে পুকুরপাড়ের উচ্চতা বাড়াতে হচ্ছে। নতুন করে জাল দিয়ে মাছ রক্ষা করথে হচ্ছে।
 
 
সরেজমিনে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, বাংলাদেশের দক্ষিনের জনপদ বাউফলে প্রতিবছর প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষাবাদ হয়। সে লক্ষ্যে আগে বীজ রেডি করতে হয়। গত একমাস ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে। অনেক কষ্ট করে বীজতলা তৈরি করে বীজ বপন করেছেন কৃষক। কিন্তু গত চার দিনের ভারি বর্ষণে ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এবছর আমনের বীজ সকংট দেখা দেয়ার অশংকায় রয়েছেন সকল কৃষক। ইতি মধ্যে ৫০ভাগের বেশি বীজের ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন কৃষক। বৃষ্টি চলতে থাকলে শতভাগ বীজতলা ক্ষতির সম্মুখিন হবে বলেও অশংকা করছেন তারা।
 
 
এছারাও পানিবন্দি হয়ে পরেছেন অন্তত ২শতাধিক পরিবার। তবে জলাবদ্ধতার কারনেই এই বন্দি অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় খাল ও নদীগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১-২ফুট পানির উচ্চতা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। কিছু কিছু জায়গায় তলিয়ে গেছে চলাচলের রাস্তা, কোথাও তৈরি হয়েছে ভাঙনের। স্থানীয়রা সেচ্ছশ্রমের মাধ্যমে রাস্তাগুলো মেরামত করেছেন।
 
 
কৃষি কর্মকর্তা মো. মিলন জানান, গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে উপজেলার কৃষি খাতে ব্যপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। পনি সম্পূর্ণ না কমলে ক্ষতি সঠিক ভাবে বলা সম্ভব না। তবে বীজতলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এবছর আমনের বীজে ব্যপক সংকট দেখা দিতে পারে বলেও জানান তিনি।
মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান ঝান্টা বলেন, বৃষ্টি এখনও চলমান থাকায় আমরা ক্ষতির পরিমান সঠিক ভাবে বলতে পারবো না। ক্ষতি তো অবশ্যই হয়েছে। অনেক মাছ চাষী আমাদেরকে ক্ষতির বিষয়ে ফোনে জানিয়েছেন।
 
 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, উপজেলার চরাঞ্চলীয় ইউনিয়ন কালাইয়া, চন্দ্রদ্বীপ, কেশবপুর, ধুলিয়া, কাছিপাড়া, বগা, নওমালাসহ ৮টি ইউনিয়নের ফসলী জমি, বীজতলা, গাছপালা ও চাছের ঘেরের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। এখনও ক্ষতির পরিমান সম্পূর্ণ নিরুপন করা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টি থামলে আমরা ক্ষতির পুরোচিত্র তুলে ধরতে পারবো। ক্ষতি নিরুপনের পর আমাদের ত্রান তৎপরতা চালু হবে।
 
 
 
 
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ