ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫ , ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিয়ের দেড় মাসেই বিষে ঝরল নববধূর প্রাণ, হাসপাতালে নিথর দেহের পাশে শোকে কাতর বাবা-মা।​


আপডেট সময় : ২০২৫-০৭-০৮ ১৫:৪২:২৮
বিয়ের দেড় মাসেই বিষে ঝরল নববধূর প্রাণ, হাসপাতালে নিথর দেহের পাশে শোকে কাতর বাবা-মা।​ বিয়ের দেড় মাসেই বিষে ঝরল নববধূর প্রাণ, হাসপাতালে নিথর দেহের পাশে শোকে কাতর বাবা-মা।​


মোঃ আব্দুল্লাহ আল মুকিম রাজু পঞ্চগড় প্রতিনিধি। 


পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের মেহেনাভিটা গ্রামে তাস খেলায় বাধা দেওয়ার জেরে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত নববধূর নাম শাহিনুর আক্তার। অভিযুক্ত স্বামীর নাম তছলিম উদ্দীন।


সোমবার (৮ জুলাই) রাত পর্যন্ত দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার আমবাড়ী ইউনিয়নের বড়দল গ্রামের বাসিন্দা সাবিরুল মন্ডল ও আছমা বেগম দম্পতি মেয়ে শাহিনুরের লাশ বুঝে নিতে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন। রাত ১২টা পর্যন্তও স্বামী কিংবা শ্বশুরবাড়ির কাউকেই খুঁজে পাননি তারা।


জানা যায়, প্রায় দেড় মাস আগে শাহিনুর আক্তারের দ্বিতীয় বিয়ে হয় পঞ্চগড়ের তছলিম উদ্দীনের সঙ্গে। গত ৫ জুলাই সন্ধ্যায় তছলিম তার ২৫ হাজার টাকায় কেনা মোবাইলটি বন্ধক রেখে তাস খেলতে যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয়। পরে শাহিনুর ফোনে তার ভাই আব্দুর রাজ্জাককে জানায়, সে বাড়ি ফিরতে চায়—সেজন্য কিছু টাকা দরকার। রাত হওয়ায় রাজ্জাক সকালে টাকা পাঠানোর আশ্বাস দেন।


রাজ্জাক জানান, ওই রাতেই তিনি শাহিনুরের শ্বশুরকে ফোন করলে তিনি বলেন, “না, কোনো ঝগড়া হয়নি। ওরা তছলিমের খালার বাড়ি বেড়াতে গেছে।” কিন্তু পরদিন সকাল ৯টায় তছলিম তাকে ফোন করে জানান, শাহিনুর কীটনাশক খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি।


শাহিনুরের ভাই বলেন, “পরের দিন সকালে বোনের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তাকে জিজ্ঞেস করি বিষ খেয়েছো কেন? সে বলে, ‘আমি বিষ খাইনি।’ এরপরই ফোনটা কেটে যায়। পরে আর যোগাযোগ করা যায়নি।”


রাত ১০টার দিকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের বারান্দায় মেয়ের মরদেহের পাশে বসে থাকেন শাহিনুরের বাবা-মা ও ছেলেসন্তান। কান্নাজড়িত কণ্ঠে শাহিনুরের বাবা বলেন,


আমরা গরিব মানুষ, টাকার অভাবে আগের দিন আসতে পারিনি। আজ হাসপাতালে এসে শুনি, আমাদের মেয়ে মারা গেছে। জামাই-শ্বশুর কেউ নেই, মেয়েটাকে ফেলে সবাই পালিয়ে গেছে।”


মা আছমা বেগম বলেন, বিয়ের একমাস পার হতেই আমার মেয়েকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছে। তাস খেলতে নিষেধ করায় এ জ্বালা! আমি এর সঠিক বিচার চাই।”


পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল কাশেম জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শাহিনুর নামে এক নারী কীটনাশক পান করে ভর্তি হন। আমরা ওয়াশ করে চিকিৎসা দিই। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রেফার্ড করতে বলা হয়। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি। আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।”


পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ