ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫ , ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পরকীয়ায় বাধা দেওয়ার সাজানো নাটক, পঞ্চগড়ে গণধর্ষণের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর দাবী এলাকাবাসীর।


আপডেট সময় : ২০২৫-০৭-০৮ ১৩:০৪:২৮
পরকীয়ায় বাধা দেওয়ার সাজানো নাটক, পঞ্চগড়ে গণধর্ষণের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর দাবী এলাকাবাসীর। পরকীয়ায় বাধা দেওয়ার সাজানো নাটক, পঞ্চগড়ে গণধর্ষণের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর দাবী এলাকাবাসীর।


মোঃ মোহন মিয়া, স্টাফ রিপোর্টার : পঞ্চগড়ে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায়, যুবকদের বিরুদ্ধে গণধর্ষনের অভিযোগ করেছে এক নারী দাবী করে এলাকাবাসী। 


পঞ্চগড় সদর উপজেলার জগদল এলাকার পাঁচ যুবককে ফাঁসাতে কুচক্রী মহলের পরামর্শে গণ ধর্ষণের অভিযোগ এনে দেওয়া হয় গন ধর্ষণ মামলা। এই মামলায় পুলিশ চার যুবককে আটক করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।


এর আগে, শনিবার (৫ জুন) গণধর্ষনের মামলায় সদর উপজেলার জগদল গোয়াল পাড়া এলাকার জনি ইসলাম, বিপ্লব হোসেন, মোকছেদুল ইসলাম, সাদেকুল ইসলামকে পুলিশ বাড়ি থেকে আটক করে। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ৪ জুন ধর্ষণের শিকার ওই নারী ছেলের হঠাৎ ডায়রিয়া হওয়ার কারণে রাত ৮ টায় বাবার বাড়ি জগদলের উদ্দেশ্য, বোদা উপজেলার জেমজুট এলাকা থেকে গাড়িতে করে পঞ্চগড়ে আসে।বৃষ্টির কারনে আটকে যায়।পরে বৃষ্টি থেমে গেলে রাত সোয়া ১০ টায় জগদলের অটোতে তিনমাইল পর্যন্ত আসে।


এসময় অটোর পেছন থেকে ফুফাতো ভাই খায়রুল ডাক দিলে, আমি অটো থেকে নামি। খয়রুলের অটোতে থাকা ৫-৬ জন যাত্রী নেমে মুখ চেপে ধরে, জোর করে নালার ধারে নিয়ে যায়। ছেলের গলায় চাকু ধরে ভয় দেখিয়ে আসামীরাসহ আরো ২-৩ জন জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। অজ্ঞান হয়ে গেলে আসামীরা পালিয়ে যায়। ছেলের কান্নার শব্দ শুনে এক ব্যক্তি জাতীয় জরুরি জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দিলে, পুলিশ প্রায় রাত একটার দিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় ওই নারী সদর থানায় গণধর্ষণের মামলা করে।


স্থানীয় খলিলুর রহমান, মোছা.আলেয়া বেগম, মনোয়ারা বেগম, রওশনআরা প্রমূখ জানান, সতরং পাড়া এলাকার আইবুল ইসলাম গোয়াল পাড়ায় বাড়ি কিনে ভাড়া দেয়। ওই বাড়িতে ভাড়া থাকত রুবেল  দম্পতি। আইবুলের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পরে ওই নারী। এতে পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। রুবেলকে মারপিট করে কয়েক মাস আগে বাড়ি থেকে বের করে দেয় বাড়ির মালিক কিন্তু বাড়িতেই অবস্থান করে রুবেলের স্ত্রী। পরবর্তীতে আইবুল ওই নারীর সম্পর্ক বেপরোয়া ভাবে চলতে থাকলে গত জুন মাসের ২২ তারিখ অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় স্থানীয় যুবকদের হাতে আটক হয় আইবুল সহ ঐ নারী। রাতেই স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন সহ স্থানীয় ও দলীয় লোকজনকে নিয়ে বসে আপোষ করে। কিন্তু ঐ নারীর কোন অভিযোগ না থাকায়, স্থানীয়দের কাছে এবারের মতো ক্ষমা চায় আইবুল ইসলাম।পরে আইবুল ওই নারীকে জেমজুট এলাকায় ভাড়া বাড়িতে রাখেন।


আইবুলের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাকে দিয়ে গণধর্ষনের এমন নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে বলে জানান, স্থানীয় লোকজন ও জন প্রতিনিধিরা। ওই নারীর সাথে সাদেকুল নামে আরেক যুবকের সাথে পরকীয়া শুরু হলে, আইবুল তাকে ডেকে মারপিট করে। আইবুল এর আগেও এমন ঘটনা করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার দাপট প্রকাশ্যে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড করতো বলে জানান।


আইবুল সাতমেরা সতরং পাড়া এলাকার মৃত আফিজ উদ্দিনের ছেলে। সেখানে তার স্ত্রী সন্তানও রয়েছে।


জগদল বাজার বণিক সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক মোজাফফর হোসেন দুলু বলেন, আইবুলকে অনৈতিক কাজে আটকের শালিসে আমিও ছিলাম। এই লোক, এর আগেও, এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।স্থানীয় যুবকরা অনৈতিক কাজে আইবুলকে আটক করার কারনে, মবিরনকে দিয়ে তাদেরকে গণধর্ষণ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আইবুলসহ ওই নারীর বাবা আমাকে আপোষ করে দেওয়ার কথাও বলেছেন। আমি সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের দাবী জানাচ্ছি।


সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মো.বেলাল হোসেন বলেন, গত কয়েক দিন আগে ওই নারীর সাথে আইবুলকে অনৈতিক কাজে আটক করা হয়। আমি আসে বিকালে শালিসের কথা বলে, ঘর থেকে বের করে দেই। রাতে স্থানীয় লোকজন ও বিএনপি নেতাদের সহযোগিতায় শালিস হয়। শালিসে এবারের মতো ক্ষমা চায় আইবুল। আমরা তাকে বলেছি এ বাড়িতে থাকতে হলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকতে হবে।


এ বিষয়ে আইবুলের সাথে যোগাযোগ করে তাকে বাড়িতে ও মুঠোফোনেও পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা জানান, ঘটনার পর থেকে তাকে এলাকায় দেখা যায় না।


পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ হিল জামান বলেন, ধর্ষণ মামলায় ৪জনকে আটক করা হয়েছে, মামলাটির সত্য উদঘাটন করতে তদন্ত চলমান রয়েছে।




 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ