ঢাকা , বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫ , ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগই ফ্যাসীবাদের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিলো -ডা. শফিকুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট সময় : ২০২৫-০৬-২৪ ২১:০২:৩৯
শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগই ফ্যাসীবাদের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিলো -ডা. শফিকুর রহমান শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগই ফ্যাসীবাদের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিলো -ডা. শফিকুর রহমান

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল প্রকার অশান্তিমুক্ত করে দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।

 

তিনি আজ রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের সাধারণ জনগণের সাথে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিস শূরা সদস্য ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক প্রমূখ।

 

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘পতিত আওয়ামী ফ্যাসীবাদী আমলে পুরোদেশকে একটি জলন্ত অগ্নিগিরিতে পরিণত করা হয়েছিলো। আমি এ আসনে নিজে প্রার্থী হলেও এখানে আমার আসার সুযোগ ছিলো না। এমনকি এ আসনে আমাদের দায়িত্বশীলকে নির্বাচনের মাত্র তিন আগে উঠিয়ে নিয়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিলো। নির্বাচনের এজেন্ট ও সহকর্মীদের রাস্তায় হাঁটতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি বরং তাদেরকে উঠিয়ে নিয়ে কনসালট্রেশন সেন্টারে আটক করে শারীরিকভাবে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছিলো। দিনশেষে কাউকে কাউকে ছেড়ে দিলেও অন্যদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিলো। আর এভাবে কোন সভ্য সমাজ চলতে পারে না। মূলত, আগুনকে বেশিদিন ছাই চাপা দিয়ে রাখা যায় না। তাই সে আগুনের লেলিহান শিখায় স্বৈরাচারের তখতে তাউস খান খান হয়ে গেছে। তাদের পতন ঘটেছে লজ্জাজনকভাবে।

 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বিরোধী দল ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। এক্ষেত্রে তারা দেশের বরেণ্য আলেম-উলামাদের বিশেষভাবে টার্গেট করেছিলো। মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে কথিত রিমাণ্ডের নামে চালানো হয়েছিলো অবর্ণনীয় নির্যাতন। হাতে হ্যান্ডকাপ ও পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে জেলে থেকে জেলে স্থানান্তর করে তাদেরকে বেইজ্জতি ও নাজেহাল করা হয়েছিলো। বিচারের নামে প্রহসন সহ নানাভাবে তাদেরকে শহীদও করা হয়েছে। তিনি আল্লামা সাঈদী (রাহি.)-এর কথা উল্লেখ করে বলেন, একজন হাসিখুশী ও প্রাণবন্ত মানুষকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি চিকিৎসকরাও তার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেনি। এরমধ্যেই তার মৃত্যু হয়েছে। বাস্তবে কী হয়েছে আল্লাহ তা’য়ালাই ভালো জানেন।

 

আমীরে জামায়াত বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলের মাধ্যমে আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে মাফিয়াতন্ত্রীদের অপশাসন- দুঃশাসন থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এক্ষেত্রে আমাদের যুব সমাজ রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। শহীদ আবু সাঈদ ‘বুকের ভেতর তুমুল ঝড়/বুক পেতেছি গুলি কর’ বলে বন্দুকের নলের মুখে বুক পেতে দিয়ে আমাদের এ ঐতিহাসিক বিজয় নিশ্চিত করেছিলেন। তার এ আত্মত্যাগই মূলত স্বৈরাচারের ভিত নড়িয়ে দিয়েছে।

 

মূলত, বাংলাদেশের ওপর আল্লাহ তা’য়ালার বিশেষ রহমত আছে। আল্লাহ আমাদেরকে অনেক বড় বড় বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন। যার অন্যতম নজীরই হচ্ছে আমাদের আগস্ট বিপ্লব। তিনি অর্জিত বিজয়কে অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করতে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার আহবান জানান।

 

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দীর্ঘ অপশাসনে-দুঃশাসনে দেশ অপরাধ ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিলো। হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, গুপ্তহত্যা, গুম ও অপহরণ আমাদের দেশকে প্রায় অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলো। দেশে আইন বা সুশাসন বলে কিছুই ছিলো না। জনগণের অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলেও রাষ্ট্রই জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে একটি মাফিয়াতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলো। কিন্তু আল্লাহর বিশেষ রহমতে সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। আগামী নির্বাচনে জনগণ আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে আমরা দেশকে দীর্ঘ অপশাসন- দুঃশাসনের দুষ্ট ক্ষত থেকে মুক্ত দেশকে ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করবো-ইনশাআল্লাহ। তিনি সুখী, সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে সকলকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

 

 

 


নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ