সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : ২৫০ শয্যার সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে দুদকের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। (২৬ মে ২৫ইং) সোমবার দুপুরে থেকে বিকাল পর্যন্ত হাসপাতালে দুদকে অভিযান চালায়।
অভিযানে ডাক্তার এবং কর্মকর্তা - কর্মচারীরা হাসপাতালে অনিয়মিত আসা, ডিসপেনসারিতে ওষুধের গরমিল থাকা, ওয়াশরুম নোংরা থাকা সহ বেশকিছু অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে দুদক টিমের কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদার বলেন, আজকে হাসপাতালে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করি। অধিকাংশ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তারমধ্যে রোগীদের বাথরুমগুলো অপরিষ্কার।এই বাথরুমগুলোতে রোগীদের যাওয়ার কোনো উপায় নেই।
কিন্তু, ডাক্তারের যে ওয়াশরুম রয়েছে, সেগুলো আবার পরিস্কার আছে। তারপর তারা অফিস প্রধান থেকে শুরু করে একেবারে নিম্ন পদস্থ কর্মচারীরা নিয়মিত অফিস করেন না। হয় অনুপস্থিত থাকেন, না হয় বিলম্বে আসেন।অধিকাংশই ৫০% অনুপস্থিত থাকেন। আজকে এসে আমরা দুই জন অনুপস্থিত পাই। এরমধ্যে অফিস প্রধান এবং মেডিকেল টেকনিক্যাল অফিসার আনোয়ার হোসেনকে অনুপস্থিত পাই। আনোয়ার হোসেন অনুপস্থিত, তার কোনো ছুটির আবেদন নেই।
এ বিষয়ে অফিস প্রধানের দায়িত্বে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে যিনি আছেন, তিনি কিছুই জানেন না। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মৌখিক ভাবে আনোয়ার হোসেনকে ছুটি দিয়ে দিয়েছেন। তত্ত্বাবধায়ক নিজেও হাসপাতালে নেই তিনিও এখন ছুটিতে রয়েছেন।
এদিকে, আনোয়ার হোসেন নিয়মিত অফিস করেন না, এই অভিযোগ আমাদের কাছে আছে। এছাড়াও হাসপাতাল থেকে অধিকাংশ কর্মকর্তা - কর্মচারী যখন বের হয়ে যায়, তখন তারা বায়োমেট্রিক ব্যবহার করেন না। এতে করে, তারা কয়টার সময়ে বের হয়ে গেলো, তার কোনো হিসাব নেই।
দুদকের কর্মকর্তা আরো বলেন, হাসপাতালে সবচেয়ে যে, বড় অভিযোগ পাওয়া গেছে, সেটা হচ্ছে, সরকারি ডিসপেনসারিতে সরাসরি সরকারি ওষুধ আসে এবং ক্রয়কৃত ওষুধ সংগ্রহ করা হয়।
সেখানে অনেক এন্টিবায়োটিক ওষুধ আছে। যেগুলো রেজিস্ট্রার খাতায় এন্ট্রি করা নেই। কিন্তু গোডাউনে অনেক এন্টিবায়োটিক ওষুধ পেয়েছি। তিন ধরনের এন্টিবায়োটিক ওষুধ পেয়েছি। যেগুলো রেজিস্ট্রার খাতায় এন্ট্রি নেই। এছাড়াও, সুলেমান নামে একজন স্টোরকিপার ছিলেন, তিনি রেজিস্ট্রার মেইনটেইন করেন।বেসরকারি ওষুধের তালিকা তিনি রেজিস্ট্রার খাতায় এন্ট্রি করতেন, সেই তালিকা আমরা পাইনি।অর্থাৎ গত মে মাসের আগের কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি। তিনি এগুলো না বুঝিয়েই চলে গেছেন।
ক্রয়কৃত ওষুধের রেজিস্ট্রার নেই। বছরে কমপক্ষে দুই থেকে তিন কোটি টাকার ওষুধ ক্রয় করা হয়। এরমধ্যে অধিকাংশ টাকাই আত্মসাৎ করা হয়। এইটার জন্য সাবেক স্টোরকিপার সুলেমানকে তারা দায়ী করছেন। বর্তমানে যে ওষুধ বিতরণ কর্মকর্তা রয়েছে, তারও অনেক দায় আছে। তার স্টোরে রাখা অনেক এন্টিবায়োটিক ওষুধ পেয়েছি। কিন্তু রেজিস্ট্রার খাতায় এন্ট্রি নেই। তারা এগুলো ফার্মেসিতে বিক্রি করে দেন। এর বাহিরে আমরা অনিয়মের অনেক কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি। এই কাগজপত্র এবং রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।