হেলাল উদ্দীন (মিঞাজী) নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধিঃ পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নে ককসবাজারের ইদগাঁ থেকে স্বশস্ত্র ৩০/৩৬ জন বহিরাগত ২ টি মাইক্রোবাস ও ১ টি ডাম্পারেন করে এক কৃষকের বসতঘরে হামলা ও ভাংচুর চালানোর খভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ হামলা চলাকালে বাঁধা দেয়ায় বহিরাগত এ সব অস্ত্রধারীরা এক সাবেক মেম্বার সহ ৬ জনকে কুপিয়ে ও আঘাত করে আহত করেছে। জানাজানি হলে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে-২ হামলাকারীকে হাতে-নাতে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার ( ৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ৬ টায় বাইশারী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের লম্বা বিলের তিতারপাড়া গ্রামে রবিউল আলমের বসতঘরে।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী বাড়ির মালিক রবিউল আলম ও পথচারী আনোয়ারা বেগম বলেন, সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে ৩ টি গাড়ীতে করে (ডাম্পার, মিনি ট্রাক, মাইক্রোবাসযোগে ) ৩০ /৩৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রবিউলের বসতঘরে হামলাসহ ভাংচুর চালাতে থাকে। সে সময় রবিউল আলম ও তার স্ত্রী সেহেরি খেয়ে ঘুমে ছিল। অতর্কিত হামলায় আঁচ করতে পেরে তারা কোন রকম ঘর থেকে বের হয়ে প্রাণে রক্ষা পায়।
স্থানীয় প্রত্যক্ষ দর্শী সাবেক ইউপি সদস্য দুদু মিয়া জানান, ৩০/৩৫ জনের এ সন্ত্রাসীদল পার্শবর্তী বাড়ীর শফিউল আলমের ভাড়া করা ককসবাজার জেলার ঈদগাও থানাধীন ইসলামপুর ইউনিয়ন ও ইসলামাবাদ ইউনিয়ন থেকে ভাঁড়া করে আনা লোকজন নিয়ে পুরো বাড়িটা ভেংগে চুরমার সহ তান্ডব লীলা চালায় প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে। এ সময় গ্রামের অধিকাংশ লোকজন ঘুমে এবং বাকী ছেলেরা রাবার বাগানে কষ আহরণের জন্য বাগানে অবস্থান করছিল। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এসব তান্ডব চালায় সন্ত্রাসীরা। ভাটাটিয়া সন্ত্রাসীদের হাতে প্রত্যেকের দেশীয় অস্ত্র দেখতে পায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এসময় এলাকাবাসী এবং গৃহকর্তাদের শোর চিৎকার ও বসতঘর ভাংচুরের বিকট শব্দে লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীদের হামলায় স্থানীয় ও বাড়ীর ৬ জন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন, সাবেক মেম্বার দুদু মিয়া (৬৭) ছৈয়দ আহাং (৫৫) মকবুল আহাং (৫০) তসলিমা বেগম ( ৩০), ফারজানা আক্তার রাফি (৩৫) ও রাবেয়া বসরী (২২)। আহতরা বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ সময় এলাকাবাসী এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ২ জনকে জনতা আটক করে পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন। আটক কৃতরা হলো ককসবাজার জেলার ঈদগাও থানাধীন ইসলামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত মনজুর আলমের পুত্র দেলোয়ার হোসেন (৪০) ও ইসলামাবাদ ইউনিয়নের আউলিয়াবাদ গ্রামের বাসিন্দা আমানুল্লাহর পুত্র মো: আবদুল করিম (৩৫)। আটককৃতরা বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
খবর পেয়ে বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী ইনচার্জ সংগীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনা ও আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী রবিউল আলম জানান, তার চাচা মকবুল আহাং বাদী হয়ে আটককৃত সহ অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েজনের নামে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি (তদন্ত) আমজাদ হোসেন বলেন, ঘটনায় আটক ২ জনসহ ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হচ্ছে।