বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের পুলটি তাদের একমাত্র পারাপারের মাধ্যম। অনেক ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করে এখানকার শিক্ষার্থীসহ হাজার ও মানুষ। পিলারগুলো মরিচা ধরা, কাঠের পাটাতন ফাঁকা-ফোঁকরা, একটু অসাবধান হলেই নদীতে পড়ে যাওয়ার শঙ্কা!দূর থেকে দেখলে মনে হবে কোনো পরিত্যক্ত সেতু। বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর ইউনিয়নের চিত্রা নদীর ওপর নির্মিত কলকলিয়া-মায়েরখালী কাঠের পোলটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। প্রতিদিন গোয়ালখালী, কাঠালবাড়ি, বানিয়াখালীসহ ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা। শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ, পথচারী সবার জন্যই এ কাঠের পোল যেন এক আতঙ্কের নাম।
সরেজমিন দেখা যায়, এখানে দশ গ্রামের হাজারেরও বেশি পরিবার বাস করে আসছে। এলাকাবাসী নিজেরাই চাঁদা তুলে বাঁশ, কাঠ সংগ্রহ করে কাঠের পুল নির্মাণ করে আবার ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে।
বছরের পর বছর প্রতিশ্রুতি মিললেও দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন আসেনি। স্থানীয়রা বলছেন, এই কাঠের পোল যেন এক অভিশাপ। একাধিকবার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন পথচারী ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। ভয়ে অনেক অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে বারবার আবেদন করেও কাঠের পোলটি পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। স্থানীয়দের দাবি স্থায়ী সমাধান!
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারজানা খাতুন বলেন, কয়েক বছর ধরে এই পোল ব্যবহার করছি। স্কুলে যেতে এই একমাত্র ভরসা এই পুল অনেক সময় নদীতে পড়ে গেছি। সংস্কারের কথা অনেক বছর ধরে শুনছি, কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি।
এমন অভিজ্ঞতা রয়েছে ছোট ছোট শিশুদেরও। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী অহনা বলেন, একদিন ব্রিজ পার হতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম, খুব ব্যথা পেয়েছিলাম। সরকার যেন তাড়াতাড়ি আমাদের ব্রিজটা ঠিক করে দেয়।"
শুধু শিক্ষার্থী নয়, বৃদ্ধ ও অভিভাবকরা রয়েছেন আতঙ্কে ।তারা বলেন, বাচ্চাদের একা স্কুলে পাঠাতে ভয় পাই। বাধ্য হয়ে প্রতিদিন সঙ্গে যেতে হয়। এই ব্রিজ পার হতে নিজেকেই ভয় লাগে, ওরা তো এখনো ছোট। সরকারের কাছে অনুরোধ, অন্তত আমাদের এই ভয়টা দূর করে দিন।
বাগেরহাট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুজ্জামান বলেন, কাঠের পোলের স্থানে ৫৫ মিটার দীর্ঘ আরসিসি সেতু নির্মাণের জন্য নকশা তৈরির কাজ চলছে। প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষ হলেই দরপত্র আহ্বান করা হবে।