
মির্জাগঞ্জ পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ আন্তঃটেন্ডারবাজী, অব্যাবস্থাপনা ও টেস্ট বানিজ্যের আতুরঘর হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।অত্র এলাকার মানুষ দীর্ঘ দিন যাবত সঠিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলা প্রেস ক্লাবের কিছু সদস্য ১৪ আগস্ট সকাল ১১ ঘটিকায় মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহার কাছে এই হাসপাতালের অব্যস্থাপনা, অনিয়ম নিয়া আলোচনা করতে গেলে যা পাওয়া যায় তা শুনে শরীর একেবারে নীল হয়ে যাওয়ার মত।
অব্যবস্থাপনার প্রথম ধাপ- গত ২০২৩ - ২০২৪ অর্থ বছরের জন্য হাসপাতালে রোগীর পথ্য সরবরাহ (খাবার),স্টেশনারি, ধোলাই টেন্ডার হয়েছিল। তার ঠিকাদার ছিল মেসার্স হাজী এন্টারপ্রাইজ প্রোঃ রেজাউল করিম। যার ওয়ার্ক অর্ডার এর মেয়াদ এক বছর যা হিসাব মতে ৩০.০৬.২০২৪ তারিখ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু পর পর তিন অর্থবছর ডায়েট সাপ্লাই করে আসছে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।যা আজ পর্যন্ত ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছর পর্যন্ত চলমান।
এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃপ্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, যে এমন কোন কাগজ পত্র পাইনাই যার জন্য একই ঠিকাদার এত বছর ডায়েট, স্টেশনারি, ধুপির কাজ করিতে পারে। তবে এটা অডিট আপত্তি যোগ্য বলে আমি মনে করি।
পটুয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন জনাব ডাঃ খালেদুর রহমান মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা তবে সব কিছু জেনে জানাবো।
নাম: না জানানোর শর্তে এই হাসপাতালের এক স্টাফ জানান, ২০২৪ সালের জুন মাসে যখন পুনরায় টেন্ডার হওয়ার কথা তখন টেন্ডারের ব্যাপারে ঘরোয়া পরিবেশে আলোচনা করে সেই সময়ের হেড ক্লার্ক রিয়াজ ও ততকালীন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তেংমং মোটা অংকের বিনিময়ে পুর্বের ঠিকাদার মেসার্স হাজ্বি এন্টারপ্রাইজ কেই কোন নিয়ম নীতি না মেনে সাপ্লাইয়ের ঠিকাদার নিয়োগ দেন, যা আজ পর্যন্ত চলমান। এই টেন্ডার দুর্নীতির সাথে ততকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান আবু বক্কর জড়িত ছিল বলে জনমনে শোনা যায়।
মির্জাগঞ্জ উপজেলাস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসার সেবার মান সন্তশজনক নয়। এই হাসপাতালের ভিতরেই সরকারি দালাল বিদ্দমান যা একেবারেই নোংরামি বই কিছুই না। রোগী চিকিৎসকের কাছে ইচ্ছামত যেতে পারে না। বাসস্টপেজের মত টানাটানির এই ডাক্তারের কাছে আসেন, আর জন ও এই রকম। তারপর শুরু হয় কোন ডায়াগনস্টিক এ পাঠাবে তা নিয়া প্রতিযোগিতা।
২০২২ সালে সরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটা রুল জারি করছিল যে, সরকারি হাসপাতালের এক কিলোমিটারের মধ্যে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার থাকতে পারবে না এতে করে সেবার মান রক্ষা করা যায় না।
কিন্তু মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেলেক্স এর চিত্র ভিন্ন। হাসপাতালের ওয়ালের ১০ হাতের মধ্যেই তিনটি প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়। যা সিভিল সার্জন ও টি এইচের পরিদর্শনে ই অনুমোদীত। আবার ডাক্তার ও রোগী যেতে যেন কোন বেগ পেতে না হয় তার জন্য হাসপাতালের কোয়াটারের ভিতর থেকে ওয়াল ভেংগে ডায়াগনস্টিক মালিক রা পথ করে নিয়াছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দ্দেশ মোতাবেক সমগ্র বাংলাদেশে ৫০ টি হাসপাতালে বৈকালিন প্রাক্টিস চালু থাকার অনুমোদন দিয়াছে। তবে সেই তালিকায় মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পলেক্স এর নাম না থাকলেও বিকালে এখানে সকল ডাক্তারদের চেম্বার বস। শুরু হয় টানাটানি ভাল ডাক্তার ওমুকে এই মিছিল যাতে রোগী রা বিচলিত হয়।কয়েকটি চেম্বারে ডাক্তার প্রাক্টিস করে প্রায় দুর্নীতির সর্গরাজ্যে পরিনত করেছে। তারা গরীব রোগীদের নিকট হতে ভিজিট ও কমিশনের জন্য অতিরিক্ত টেস্ট চাপিয়ে পাসের ডায়াবেটিস এর দালালের হাতে ধরিয়ে দেয়।
অত্র হাসপাতালে রোগীদের জন্য সরকার কর্তৃক বিনামূল্যে সরবরাহকৃত ঔষধের ঠিক মত ডিস্টিভিউশন হচ্ছে না। রোগীদের সাথে হাসপাতালের প্রায় সকল স্টাফদের মার্জিত আচরণ করে না। এজন্য প্রয়োজনে ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের এ বিষয়ে নিয়মিত কাউন্সিলের ব্যবস্থা করা।
হাসপাতালের প্যাথলজি ও রেডিওলজি বিভাগ ২৪ ঘন্টা খোলা থাকলেও এখানে কোন টেস্ট করানো হয় না। অত্র হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য দক্ষ স্টাফদের সংকট বিদ্দমান।
এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সজনদের সাথে আলোচনা করে যা বোঝা গেল তাতে যা মনে হয় তাতে সরকারিচাকরী বিধিমালা অনুযায়ী যাহারা অত্র হাসপাতালে নির্দিষ্ট সময়ের অধিক সময় কর্মরত আছেন, তাদেরকে অনতিবিলম্বে বদলি করে নতুনদের যায়গা করে দেওয়া। নতুন রা আসলে সেবার মান বৃদ্ধি পাবে। হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অবস্থা খুবই খারাপ। রোগীদের নিরাপত্তার লক্ষে হাসপাতালের আইন শৃঙ্খলার উন্নতি করতে হাসপাতালে প্রয়োজনীয় উন্নতমানের সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা সেবার মান বৃদ্ধি পাবে।
হাসপাতাল থেকে সকল ধরণের সিন্ডিকেট ও রোগী হয়রানি বন্ধ করে অত্র হাসপাতালকে শতভাগ দালাল মুক্ত বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হলে সেবার মান বৃদ্ধি পাবে বলে সেবা গৃহীতাদের মন্তব্য। এখানে অপারেশন থ্রিয়েটার চলমান কিন্তু কোন অপারেশন এখানে হয় না।