
মোঃ অপু খান চৌধুরী। কোটি টাকার স্বর্ণের কলসের লোভে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে এক গৃহবধু। শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় এক প্রতারকের ফাঁদে পা দিয়ে নগদ সাত লাখ টাকা ও সাত ভরি স্বর্ণালংকার খোয়ান তিনি।
ভুক্তভোগী ওই নারী কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের দক্ষিণ নাগাইশ এলাকার দোকানদার কামাল হোসেনের স্ত্রী মোসা. রাহিমা আক্তার (২৫)। ঘটনার পর পরিবারটি সর্বস্বান্ত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ ব্যপারে প্রতারণার শিকার ওই নারী ব্রাহ্মণপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেছে।
স্থানীয় ও থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন পূর্বে মোসা. রাহিমা আক্তারের নিকট মোবাইলে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ফোন করে জানায়, তাকে ৭টি “কোটি টাকার স্বর্ণের কলস” উপহার দেওয়া হবে। তবে শর্ত হিসেবে বলা হয়, দরবার শরীফের সামনে গিয়ে তাকে ছয় ভরি স্বর্ণ এবং দুই লাখ টাকা দিতে হবে। লোভে পড়ে রাহিমা আক্তার সরল বিশ্বাসে এই প্রস্তাবে রাজি হন। সে নিজের থাকা তিন ভরি স্বর্ণের সঙ্গে আরও তিন ভরি ধার করে, মোট ছয় ভরি স্বর্ণ নিয়ে নাগাইশ দরবার শরীফ এলাকায় উপস্থিত হন।
এরপর ওই প্রতারকের নির্দেশ অনুযায়ী গত শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে উপজেলা সদরের মোশাররফ হোসেন খাঁন চৌধুরী কলেজ গেটে গিয়ে সাত লাখ টাকাও তুলে দেন প্রতারকের হাতে। স্বর্ণালংকারের একটি অংশ রাহিমা আক্তার বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে ধার করেছিলেন।
টাকাগুলো ছিল তার স্বামী কামাল হোসেনের—যিনি সম্প্রতি বাড়ির নির্মাণকাজের জন্য আলমারিতে সংরক্ষণ করেছিলেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে স্বামী টাকা চাওয়ার পরেই আসল ঘটনা জানাজানি হয়। পারিবারিক সূত্র জানায়, পরিবারের ছোট ছেলেটি নাকি বারবার মাকে বারণ করেছিল টাকা ও স্বর্ণ না দিতে। কিন্তু প্রতারকের লোভনীয় প্রস্তাবের প্রলোভন সামলাতে পারেননি ওই নারী।
বর্তমানে কামাল হোসেন ও তার স্ত্রী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এলাকায় এই ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতারণার শিকার ওই নারী ব্রাহ্মণপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) টমাস বড়ুয়া বলেন, এ ঘটনায় প্রতারণার শিকার ওই নারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।