স্টাফ রিপোর্টারঃ নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত প্রতারক ও মহানগর এলডিপি সভাপতি পরিচয়দানকারী একাধিক মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী কামাল প্রধানকে ১০ জুলাই সকালে ফতুল্লা থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে বন্দর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে বন্দর থানা পুলিশ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী কামালকে বিকেলে নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বন্দর উপজেলার মিনারবাড়ী, মীরকুন্ডি গ্রামের মোঃ রিয়াজ উদ্দিন এর ছেলে রবিউল আউয়াল সাজুকে কোরিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে ৬ লক্ষ টাকা দাবী করে। গত ২০২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারীতে নারায়ণগঞ্জ চাষাড়ায় আবেদীন ভিলায় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুলতান মাহমুদের অফিসে চুক্তিনামা দলিলের মাধ্যমে নগদ ৪ লক্ষ টাকা প্রতারক কামাল বুঝে নেয়।
বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ বাগবাড়ি এলাকার আবুল প্রধানের কুলাঙ্গার পুত্র কামাল প্রধান বাকি ২ লক্ষ টাকা সাজুকে কোরিয়ার ভিসা হওয়ার পর দিতে হবে বলে জানায়। অতঃপর অবশিস্ট ২ লক্ষ টাকাসহ বিমান টিকেট বাবদ ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ও প্রসেসিং ফি ৫০ হাজার টাকা সর্বমোট ৮ লক্ষ ১০ হাজার টাকা নেওয়ার পর সাজুর নামে একটি ভিসার কাগজ প্রদান করে।
বিদেশে যাওয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করলে স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্সি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা জানান যে, উক্ত ভিসাটি ভূয়া ও প্রতারক কামালের তৈরীকৃত একটি নকল ভিসা মাত্র। এই ঘটনায় প্রতারক কামালের কাছে সমস্ত টাকা ফেরত চাইতে গেলে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে গত ২০২৪সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী দুপুর ১২টার সময় আবারো টাকা ফেরত চাইতে গেলে হত্যা করার হুমকি দিয়ে বলে- এর পরে যদি তুই টাকা পয়সা চাষ তাহলে তোকেসহ তোর পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা মামলা মোকদ্দামায় ফাসিয়ে জেল খাটাবো।
যার ফলশ্রুতিতে সম্প্রতি বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী সদর আদালতে একটি সি.আর মামলা দায়ের করেন, ভুক্তভোগী রিয়াজ উদ্দিন, মামলা নং-৬২৫/২০২৫, ধারা-৪০৬, ৪২০, ৫০৬, ৩৪ দন্ড বিধি। উক্ত মামলাটি আমলে নিয়ে আদালাত কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে।
উল্লেখ্য যে, প্রতারক কামাল প্রধান নিজেকে কখনো কয়েকটি ভূয়া পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশক ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর এলডিপির সভাপতি পরিচয়দানকারী এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ হোয়াটসআপ, ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন মর্যাদাশীল ব্যক্তিদের অপপ্রচার চালিয়ে মান সম্মান ক্ষুন্ন করে সামাজিক মর্যাদার ক্ষতি করছে এবং মিথ্যা মামলা মোকদ্দমা দিয়ে মানুষদের ফাসিয়ে চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতারক কামালের বিরুদ্ধে বন্দর থানা, সোনারগাঁ থানা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, ফতুল্লা থানা, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা এবং নারায়ণগঞ্জ আদালতে সব মিলেয়ে প্রায় ২২ টি মামলা রয়েছে। এই প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছে নারায়ণগঞ্জবাসী।