মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীতে হামলা, ছিনতাই ও এলোপাথাড়ি গুলি বর্ষণের ঘটনায় ছেলে ও ভাতিজা-সহ ১৫ মামলার আসামি কথিত সাংবাদিক নজরুল ইসলাম জুলুকে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। বুধবার (২ জুলাই) দিনগত রাত সাড়ে ১০ টায় নগরীর বোয়ালিয়া থানার টিকাপাড়া (খুলিপাড়া) এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মোঃ নজরুল ইসলাম জুলু (৫১), তিনি নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার টিকাপাড়া (খুলিপাড়া) এলাকার মোঃ নজির শেখ ড্রাইভারের ছেলে ও মোঃ নাজমুল ইসলাম জিম (২৭), তিনি জুলুর ছেলে এবং ভতিজা মোঃ মনা ইসলাম (২৮), তিনি একই এলাকার মোঃ আনসার আলীর ছেলে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় শনিবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর), মোহাম্মদ রকিবুল হাসান ইবনে রহমান।
তিনি জানান, রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার রামচন্দ্রপুর এলাকার সিয়ামের সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরে গত মঙ্গলবার (১জুলাই) বিকাল ৫ টায় ওই এলাকায় আপস মীমাংসার বৈঠক চলছিল। আপস মীমাংসার এক পর্যায়ে আসামিরা সিয়াম ইসলামের ওপর দলবদ্ধভাবে হামলা চালায়। তাকে গলা চেপে ধরে এবং জিআই পাইপ দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
এছাড়াও, আসামিরা তার কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং অন্য আসামিরা ২,৪০০ টাকা ও ৫ হাজার টাকা মূল্যের রূপার চেইন ছিনিয়ে নেয়। সে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে আসামিরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলির ভয়ে তিনি নিকটবর্তী ভবনে আশ্রয় নেন। এলোপাথাড়ি গুলির ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা ঘেরাও করতে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সিয়াম বোয়ালিয়া থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করে। ওই অভিযোগের পর রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী বুধবার রাত সাড়ে ১০ টায় টিকাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্র বহন, ধর্ষণ, জুয়া ও মারামারিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাÐের সাথে জড়িত। আরো জানা যায়, গ্রেফতারকৃত নজরুল ইসলাম জুলু এলাকায় অবৈধ প্রভাববিস্তারকারী হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন যাবত তার ছত্রছায়ায় নগরীতে একাধিক সন্ত্রাসী কর্মকাÐ সংঘটিত হয়ে আসছে। এছাড়াও জুলুর নেতৃত্বে রাজশাহী প্রেসক্লাব দখলসহ ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, কথিত সাংবাদিক নজরুল ইসলাম জুলুর নামে বিভিন্ন অপরাধে ১৫টি তার ছেলে জিমের নামে ২টি এবং মনার নামে ৭টি মামলার রয়েছে বলেও জানায় পুলিশের এই কর্মকর্তা। এ ব্যপারে গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার সকালে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।