নিজস্ব প্রতিবেদক
এ যেন সোনার হরিণ পিয়ন থেকে শুরু করে বহু কর্মচারী শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা কর্মচারীদের ঘুষ, দুর্নীতি এবং অনিয়মের কারণে বার বার আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে। রাজউকের বিভিন্ন কার্যক্রম এবং উন্নয়ন প্রকল্পসমূহে অনিয়ম-দুর্নীতি এখন গেড়ে বসেছে। সংস্থাটির সেবার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উভয় স্তরেই দুর্নীতি ও ভয়াবহ অনিয়ম রয়েছে। আর এসব দুর্নীতির ক্ষেত্রে রাজউক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় আঁতাত স্পষ্ট। ফলে, রাজউক কর্তৃক সার্বিক জবাবদিহি কাঠামো কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নসহ অন্যান্য দায়িত্ব পালন ব্যহত হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার পাওয়া গেল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)’র নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিজাইন-২) মো: হাফিজুল ইসলামকে।
অনুসন্ধানী জানা যায়, রাজউকের চাকরিতে যোগদানের পর হাতে পেয়ে যান আলাদিনের চেরাগ অল্প সময়ের ব্যবধানে ঘুষ দুর্নীতি আর সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম করে কামিয়েছেন শত শত কোটি টাকা স্ত্রী সন্তানসহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে বেনামি করেছন বিপুল পরিমাণ সম্পদ।
হাফিজুলের অবৈধ সম্পদের অভিযোগঃ
উত্তরা রাজউক মার্কেটের পেছনে ৬ কাঠা জমির উপর ৬ তলা বাড়ি, যেখানে তিনি ৫ তলায় বসবাস করেন। আশুলিয়ায় একটি বাণিজ্যিক প্লট, যেখানে মার্কেট করে ভাড়া দিয়েছেন। উত্তরা দিয়াবাড়ীতে
“মুন ভিলা” নামে ৩.৫ কাঠার একটি প্লট, যেখানে বাগানবাড়ি নির্মাণ করেছেন। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ ধানগড়া এপেক্স হাসপাতালের পেছনে রয়েছে ২৭ কাঠার একটি বাগানবাড়ি। উচ্চ মূল্যের ব্যক্তিগত একটি প্রাইভেটকার রয়েছে (মেরুন রঙের প্রিমিও) এছাড়াও, রাজউক কর্মকর্তা প্রকৌশলী হাফিজুল ইসলামের নামে-বেনামে আরও অনেক সম্পত্তি থাকার অভিযোগ উঠেছে।
অবৈধ সম্পদের আয়ের উৎস জানতে চাইলে সাংবাদিকদের সাথে সন্ত্রাসীসূলভ আচরণ করেন, রুমের দরজা বন্ধ করে পেটানোর হুমকি দেয়, ইতিমধ্যে বেশ কিছু গণমাধ্যমে উঠেছে সে তার সন্ত্রাসী সুলভ আচরণের কর্মকাণ্ড। তার কাছে সাংবাদিক গেলেই বলেন আমি কত টাকার মালিক সেই তথ্য সাংবাদিকদের দেওয়া যাবে না দিতে বাধ্য না, সাংবাদিকদের সাথে তুই-তোকারি করে ব্যবহার করেন বলেন যদি নিউজ করে আমার কিছু ছিঁড়তে পারো তাহলে করিস, রাজউকের মত একটা প্রতিষ্ঠানের একজন প্রকৌশলীর এই ধরনের আচরণে হতভঙ্গ হয়ে যায় সাংবাদিকরা, বিগত স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগের আমলেও ছিলেন ব্যাপক প্রভাবশালী আবার বর্তমানে কিছু রাজনীতিবিদকে অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করে ধরে রেখেছেন নিজের ক্ষমতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজউকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও কর্মচারী বলেন, উনি শুধু সাংবাদিক না অফিসের অনেক সিনিয়র জুনিয়র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথেও এই ধরনের বাজে ব্যবহার করেন, ওনার মত একজন শিক্ষিত ব্যক্তি যদি এ ধরনের নোংরা আচরণ করে তা খুবই দুঃখজনক এবং উনি কাউকে ভয় পান না উনার ব্যাপক প্রভাব। আর টাকা ছাড়া কিছুই বোঝে না ওনার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত দুদকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ জমা হওয়ার পরও উনার ক্ষমতা ও অবৈধ অর্থে সবকিছু অদৃশ্য করে দেন।বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ও ৫ই আগস্টের পরে উনার বিরুদ্ধে কথা বলায় অনেককে তিনি শাস্তি দিয়েছেন করেছেন বদলি এই জন্য উনার বিরুদ্ধে ভয় কেউ মুখ খুলেনা।
প্রশ্ন উঠেছে একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে কীভাবে এত সম্পদ গড়েছেন তিনি? একজন সরকারি প্রকৌশলী হিসেবে দীর্ঘদিন একই পদে থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তোলার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। তিনি কি নিয়ম অনুযায়ী তার সম্পদের হিসাব দাখিল করেছেন? দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবে? এ বিষয়ে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন রাজউকের অনেক প্রকৌশলী ও কর্মকর্তা আমাদের নজরদারিতে রয়েছেন অবৈধ অর্থ যারা সম্পদ করেছেন তাদেরকে কাউকেই কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে হাফিজুর ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি তাই তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
হাফিজুল ইসলামের ঘুষ দুর্নীতির অবৈধ অর্থে আরও সম্পদের বিবরণ নিয়ে আসছে আগামীতে দ্বিতীয় পর্ব।