এসময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং দপ্তরসমূহের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ তাঁদের বক্তব্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপির অনুমোদন ও বাস্তবায়নে বিলম্বের বিষয়ে তাদের হতাশা ও ক্ষোভের কথা জানান। বক্তাদের মধ্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব নজরুল ইসলাম বলেন, আজ প্রাণের প্রতিষ্ঠান রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত আমরা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করব না। তিনি আরও বলেন, আমরা দীর্ঘ নয় বছর ধরে ধুঁকছি, আর নয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জমিতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে এমন টালবাহানা গ্রহণযোগ্য নয়। সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব ইয়াতসিংহ শুভ বলেন,
এ পর্যন্ত এই ডিপিপি সাতবার সংশোধন করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগ যখন যে তথ্য-প্রমাণক চেয়েছে, আমরা সরবরাহ করেছি। ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ছাড়পত্র এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১০০ একর ভূমি ব্যবহারে অনাপত্তি পত্র ডিপিপি’র সঙ্গে সরবরাহ করা হয়েছে।
এতকিছুর পরও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি’র অনুমোদন না হওয়ায় আমাদের মনে নানাবিধ শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। আমরা মনে করছি, এর পিছনে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল জড়িত আছে।
শিক্ষার্থীদের মানবন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বলেন, আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে। দীর্ঘ নয়বছর ধরে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভাড়া করা ভবনে চলছে, এটি কেবল আমাদের জন্য নয়, সমস্ত দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য লজ্জার।
আমরা এর আগেও রাজপথে ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়েছি। সরকারের আশ্বাসে আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরে এসেছিলাম। তবে এবার সমাধান না নিয়ে রাজপথ থেকে আমরা ফিরছি না। আমাদের কর্মসূচি কঠোর থেকে কঠোরতর হবে। বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজ বলেন, বাংলাদেশের ব্যবস্থা হয়েছে ঠ্যালাগাড়ির মতো, ধাক্কা না দিলে চলে না।
একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যলয়ের ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামতে হয়, এটি সভ্য সমাজের জন্য লজ্জার। তিনি আরও বলেন, আমাদের ডিপিপি একনেকে অনুমোদন পায়নি উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসানের জন্য।
একনেক সভার সকলেই ডিপিপি অনুমোদনে সম্মত হলেও তিনি বললেন, প্রস্তাবিত প্রকল্প অঞ্চল পরিদর্শন করে তাঁর মত জানাবেন। তিনি সরেজমিনে প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে গেলেন এবং প্রতিবেদন জমা দিলেন। এরপর একটির পর একটি একনেক সভা পেরিয়ে যায় আমাদের ডিপিপি এজেন্ডাভুক্ত হয় না। এর জন্য এই উপদেষ্টাই দায়ী।
আমরা ডিপিপি’র অনুমোদন চাই এবং এই উপদেষ্টার পদত্যাগ চাই। সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় সরকার বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি’র অনুমোদন ও পূর্ণ বাস্তবায়ন না হলে আমরা সড়ক ও রেল অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সুজানা বলেন, ক্যাম্পাসহীনতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে হীনম্মন্যতা সৃষ্টি করে। আমারা ক্যাম্পাসের সকল সুবিধা নিয়ে দেশের জন্য জনসম্পদ হিসেবে তৈরি হতে চাই।
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আজিজ বলেন, আশা করি সরকার আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেবে না। আমারা স্বস্তি নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ফিরতে চাই। তবে দাবি পূরণ না হলে আমরা রাজপথ থেকে ফিরছি না। এসময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ডিপিপি’র দ্রুত অনুমোদন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান-এর পদত্যাগ চেয়ে স্নোগান দিতে থাকেন।