নিজস্ব প্রতিবেদক- রংপুরে বদরগঞ্জে ওয়ারেছিয়া ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসায় ২০২৩ ও ২০২৪ সালে ৬ টি পদে ছয়জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ঐ নিয়োগ দেওয়ার সময় যথারীতি নিয়ম মেনে ও বিধি মোতাবেক ছয় জনকে নিয়োগ দেন অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম ও তৎকালীন মাদ্রাসার কমিটি।
সম্প্রতি মাদ্রাসায় সরজমিন ও বিভিন্ন অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২৩ ও ২৪ সালে মাদ্রাসাটি ছিল শ্রীহীন। ভবনগুলো ছিল জরাজীর্ণ। সামান্য বৃষ্টি হলে ছাদ চুয়ে পানি পড়ত। শিক্ষার পরিবেশ ছিল হযবরল অবস্থা।
মাদ্রাসার ভঙ্গুর অবস্থা দেখে ঐ সময় এগিয়ে আসেন একজন সাদা মনের মানবিকসুলভ শিক্ষানুরাগী মানুষ। তিনি সর্বদা অসহায় হতদরিদ্র শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়াতেন।তিনি বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক মানবিক ব্যাক্তি আবদুল্লাহ আল মামুন। তার সাথে মাদ্রাসার অভাবনীয় উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম।
জানা গেছে, ২০২৪ সালে জরাজীর্ণ মাদ্রাসার ভবনগুলো ১ম তলা থেকে ৩তলা পর্যন্ত ভিতর বাইরে প্লাস্টারকরন কাজ করসহ ভবন নির্মান করা হয়। নির্মান কাজ তিনমাস পর্যন্ত কাজ করেন রাজমিস্ত্রীর একটি দল। এতে মাদ্রাসা তহবিল থেকে বিশাল অংকের টাকা ব্যায় হয়। এরপর শিক্ষার মান হযবরল অবস্থা থাকায় অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম পরিচালনায় মাদ্রাসা শিক্ষার মান অন্ধকার থেকে আলোতে আসতে থাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দু'জন শিক্ষক বলেন, আমার জানামতে, মামুন সাহেব ঐ সময় নিয়োগ গুলোতে কোন অনিয়ম করেনি। নিয়োগ প্রক্রিয়া বিধি মেনে ছয়জনকে নিয়োগ দেন। এখন দুই বছর একটি কুচক্রী মহল ভুয়া ভিত্তিহীন খবর ছড়িয়ে এই দু'জন ব্যাক্তিকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন।
এবিষয়ে তৎকালীন সময়ে সহকারী (ফুড) পদে কিশোর কুমার বলেন, আমি কতটাকা দিয়েছি আমার মনে নেই।মনে হলে আপনাকে জানাবো।
আয়া পদে নিয়োগকৃত জেসমিন বলেন, নিয়োগের সময় আমি কোন টাকা দেইনি। আমার ভাই এবিষয়ে বলতে পারবে।
ল্যাব গবেষণাগর আনোয়ার কাছে নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি একটু রাগান্বিত কন্ঠে বলেন, ভাই এগুলো বিষয়ে এতদিন পর কেন। দুই বছর আগে সবকিছু হয়ে গেছে। এখন কেন এগুলো নিয়ে কানা ঘুষা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো তিনজন নিয়োগ নিতে আসা প্রার্থী বলেন, আমরা কোন নিয়োগের সময় কোন প্রকার অর্থ লেনদেন করেনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এগুলো অবান্তর কথা এতদিন পর কেন উঠছে। এটা তো দুই বছর আগের কথা। স্বার্থন্বেষী একটি চক্র অসাধুভাবে এটি এই দুজন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে।
এবিষয়ে মাদ্রাসা সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঐ সময় যথারীতি নিয়ম মেনেই নিয়োগগুলো হয়েছিল। এখানে কোন অসত্য কোন কিছুই হয়নি।
ওয়ারেছিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল আলিম বলেন, আমি যখন মাদ্রাসা দায়িত্ব নেই তখন মাদ্রাসার অবস্থা একেবারে ভঙ্গুর ছিল। মাদ্রাসা তিন তলার প্রতিটি ভবন ছিল প্লাস্টারহীন। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিটি ভবনের চারপাশের দেয়াল প্লাস্টার করি তিনতলা পর্যন্ত। উপরে টিনশেড ছিল সেগুলো পরিবর্তন করে ঢালাই দিয়েছি। এখন এতদিন পর আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন স্বার্থান্বেষী একটি মহল।আমি নিয়োগের সময় কারো কাছ থেকে একটি টাকাও নেয়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে অত্র মাদ্রাসাটি আলিম পরিক্ষায় রংপুর জেলার মধ্যে সেরা মাদ্রাসা স্বীকৃতি অর্জন করে। এছাড়া শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ হিসেবে আব্দুল আলীম মর্যাদা পায়। টানা কয়েক বছর উপজেলা মধ্যে সেরা মাদ্রাসার মর্যাদা পায়।
বর্তমান উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে নাম প্রকাশ না করার অনিচ্ছুক তিনজন অভিভাবক বলেন, অত্র মাদ্রাসার শিক্ষার মান পূর্বের চেয়ে অনেক অনেক বেশি ভাল।এই মাদ্রাসার অনেক শিক্ষার্থী দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সুযোগ পায়। এছাড়াও দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু একটি কুচক্রী স্বাথান্বেষী মহল এসব মিথ্যা ভিত্তিহীন বিভ্রান্তকর অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মান ও পরিবেশ বিনষ্ট করছেন। যা আমরা সচেতন অভিভাবক সমাজ কোন ভাবেই এটা আশা করি না। আমরা চাই এর একটা নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত পূর্বক যথাযথ দ্রুত সমাধান হোক।