ঢাকা , বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫ , ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিরাজদিখান-কেরানীগঞ্জে অবৈধ ড্রেজিংয়ের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর প্রতিরোধ এবং ড্রেজার ভাঙচুর

বিশেষ প্রতিনিধি
আপডেট সময় : ২০২৫-০৭-০৮ ২১:২০:৪৭
সিরাজদিখান-কেরানীগঞ্জে অবৈধ ড্রেজিংয়ের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর প্রতিরোধ এবং ড্রেজার ভাঙচুর সিরাজদিখান-কেরানীগঞ্জে অবৈধ ড্রেজিংয়ের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর প্রতিরোধ এবং ড্রেজার ভাঙচুর

নাদিম হায়দার বিশেষ প্রতিনিধি- পুরাতন অনুমোদন দেখিয়ে সিরাজদিখান ও কেরানীগঞ্জের সীমান্তবর্তী ধলেশ্বরী নদীতে বিশাল এলাকাজুড়ে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করছিল প্রভাবশালী একটি চক্র। অভিযোগের তীব্রতায় আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে সিরাজদিখানের সৈয়দপুর ও কেরানীগঞ্জের সোনাকান্দা এলাকার স্থানীয় শতাধিক গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে একাধিক ড্রেজার ভাঙচুর করে, যা ধলেশ্বরী নদীতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হচ্ছিল যার মাধ্যমে অবৈধভাবে মাটি কেটে আসছিল।

 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোনো ধরনের প্রশাসনিক বাধা না থাকায় মাটি কাটা দিনে দিনে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তাই এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে নিজেরাই ওই ড্রেজার গুলোর পাইপ ভেঙে ফেলে এবং উত্তেজিত জনতা অবৈধভাবে  বালু।/মাটি কাটার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

 
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী দুই ব্যক্তি আয়ুব আলী ও আশকর আলী সিরাজদিখানের একটি সীমিত এলাকার জন্য বিআইডব্লিউটিএ থেকে প্রাপ্ত পুরাতন একটি অনুমতির কাগজ দেখিয়ে স্থানীয় কিছু বিএনপি নেতার সহযোগিতায় সিরাজদিখান ও কেরানীগঞ্জের বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে অবৈধভাবে ড্রেজিং কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। স্থানীয়রা শুরু থেকেই এই অনুমতির যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন।


জানা যায়, আওয়ামী সরকারের আমলে একই গ্রুপ এই মাটি কেটে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল। তৎসময়ে ওদের অত্যাচারে এলাকাবাসী মুখ খুলতে সাহস পায়নি কারন যারাই প্রতিবাদ করতো প্রশাসন দিয়ে তাদের হয়রানি  করতো।

 
এ বিষয়ে প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, তাদের প্রদর্শিত অনাপত্তিপত্র (NOC) সঠিক নয়। বিষয়টি যাচাই-বাছাইয়ে আমরা নিশ্চিত হয়েছি অনুমতির সীমা লঙ্ঘন করা হয়েছে। অনুমতির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও তারা ড্রেজার জোরপূর্বক  চালিয়ে গেছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।

 
পরিবেশবীদরা জানান, ড্রেজিংয়ের ফলে নদীর স্বাভাবিক গতি ও গঠন নষ্ট হচ্ছে, নদী ভাঙন বাড়ছে এবং নদীপাড়ের কৃষিজমি স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়াও ধলেশ্বরী নদীতি নিকটতম ২ টি ব্রীজ রয়েছে এতে ব্রীজের অনেক ক্ষতির আশংকা রয়েছে। 

 
স্থানীয় সাবেক মেম্বার আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা প্রশাসনকে বহুবার জানিয়েছি, কিন্তু তারা শুধু বলেছে কাগজ যাচাই হচ্ছে। এই সুযোগে তারা মাটি কেটে শেষ করে দিচ্ছে নদীটাকে ও নিকটতম জমিগুলোতে। আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি দ্রুত এই মাটিকাটা বন্ধ করে আমাদের রক্ষা করুন এবং পরিবেশ সুন্দর করে গড়ে তুলুন।
 
 
অভিযুক্তদের মধ্যে আয়ুব আলীকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি, আর আশকর আলীর পক্ষ থেকেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 
গ্রামবাসী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, প্রশাসন যদি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়, তবে তারা নিজেরাই এলাকায় বড় পরিসরে মানববন্ধন করে এর বিরুদ্ধে  প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।  অবৈধ মাটি কাটার বিরুদ্ধে  কঠোর ব্যবস্থা চেয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছেন দুই পারের এলাকাবাসী।




 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ